জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিঃ
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি)র শিক্ষা ও গবেষণায় আমরা জোর দিচ্ছি। এবছর গবেষণা ক্ষেত্রে বাজেট আরো বাড়ানো হয়েছে। আমরা আশাবাদী আমাদের শিক্ষার্থীরা ভবিষ্যতে আরো সাফল্য অর্জন করবে। জবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইমদাদুল হক গত বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) মনোবিজ্ঞান বিভাগের আয়োজনে ১৩তম ব্যাচের স্নাতক সমাপনী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
কেন্দ্রীয় অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত এই অনুষ্ঠানে তিনি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এসময় তিনি আরো বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, হঠাৎ যখন চারিদিকে বিশেষ করে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় ও অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের দেখলাম আত্মহত্যার প্রবনতা বেড়েই চলছে তখন আমরা খুব দ্রুত কাউন্সেলিং সেন্টার উদ্বোধন করলাম। সেখানে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তাদের মানসিক স্বাস্থ্য সেবা নিতে পারছে। কাউন্সেলিং সেন্টার চালুর পর থেকে কেউ আর আত্মহননের পথ বেছে নেইনি এটাই সেরা অর্জন। দ্রুতই কাউন্সেলিং সেন্টারে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বিভিন্নপদ পাশ করে ফর্মাল একটা কাউন্সেলিং সেন্টারেএ চিন্তা করছি।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন লাইফ এন্ড আর্থ সাইন্স অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো: মনিরুজ্জামান খন্দকার। এ সময় উপাচার্যের উপস্থিতিতে কেক কেটে উদযাপন করা হয় সমাপনী অনুষ্ঠান।
প্রোগ্রামের সভাপতি অধ্যাপক ড. ফারজানা আহমেদ; প্রোগ্রামের কনভেনর, বিশ্ববিদ্যালয় কাউন্সেলিং সেন্টার, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক স্ট্যান্ডিং কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. নূর মোহাম্মদ উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া আরো উপস্থিত ছিলেন সহকারী প্রক্টর কাজী নূর হোসাইন মুকুল সহ বিভাগের অন্যান্য শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। পবিত্র কোরআন ও গীতা পাঠের মাধ্যমে শুরু হয় অনুষ্ঠান।
এর আগে সকাল সাড়ে ১০টায় বিভাগের শিক্ষক ও বিজ্ঞান অনুষদের ডিনের উপস্থিতিতে বিভাগের সামনে থেকে একটি র্যালি বের করা হয়। র্যালিটি ভিসি ভবন, শহীদমিনার, কাঠালতলা, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ হয়ে রফিক ভবনে এসে শেষ হয়।
প্রোগ্রামের সভাপতি বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. ফারজানা আহমেদ বলেন, তোমরা ১৩ তম ব্যাচ অনেক প্রাণোচ্ছল। তোমরা যেখানেই থাকো তোমাদের সাধ্যমত মানুষের সেবা করার চেষ্টা করবে।জীবনে যেমন সুখ আছে, তেমনি দুঃখও আছে।দুটোকেই সমান গুরুত্ব দিতে হবে। তবেই জীবন হবে স্বার্থক।
১৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের মিমিক্রি, র্যাম্প শো, নাচ গান আর অভিনয়ে মাতিয়ে তুলে পুরোটা সময়। তবে শেষ বেলায় কেউ আর নিজেদের ধরে রাখতে পারেনি। করোনাকালীন সময় মিলিয়ে দীর্ঘ পাঁচ বছরের যাত্রা শেষ হলো অবশেষে । একে অপরকে জড়িয়ে ধরে নিজেদের শেষ আবেগটুকু প্রকাশ করেন শিক্ষার্থীরা।
১৩ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী এইচ এম তৌফিকুর রহমান বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আমার আবেগের জায়গা।নিজের পরিবার থেকে যেমন সম্পর্কচ্ছেদ সম্ভব নয় ঠিক তেমনি মনোবিজ্ঞান বিভাগ থেকে সম্পর্কচ্ছেদ সম্ভব নয়।জীবন আসলে খুব ছোট।জীবনের এক পর্যায় থেকে অন্য পর্যায়ে যাওয়ার সময়টা এতোটা মধুর নয়। সবার কাছে দোয়া প্রার্থী যেন জীবনে মানুষের মত মানুষ হতে পারি।
১৩তম ব্যাচের আরেক শিক্ষার্থী সামান্তা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের প্রথম দিনে ভয়ে ছিলাম যে নতুন সব অপরিচিত মুখ,কিভাবে বন্ধুত্ব হবে! এই অপরিচিত মুখদের সাথেই কেটে গেলো চারটি বছর। এই চারবছরে তারা কখন যে এতো আপন হয়ে গেলো টের ই পেলাম না। আজ অনার্স জীবনের শেষ দিনে এসে উপলব্ধি হলো এই মুখ গুলো আমার কত প্রিয়। এদের সাথেই কেটেছে কত সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না মেলানো সময়। জীবনের এক সোনালী সময় এদের সাথে পাড় করেছি।
১৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী খাইরুল ইসলাম মেহেদী বলেন, ভার্সিটি জীবনের প্রায় শেষ প্রান্তে অবস্থান করছি।যা কিছু হারিয়েছি তার চেয়ে বেশি পেয়েছি। ভাবতেই অবাক লাগে সময় এত দ্রুত চলে গেল। এ যেন প্রেমিকার ভালবাসার মত ; আসে একবার কিন্তু চলে যায় বার বার। অনন্ত স্মৃতির মাঝে উজ্জল হয়ে থাকবে প্রথম যৌবনের কয়েকটি বছর, শত পাওয়ার আনন্দ, কিছু কিছু না পাওয়ার বেদনা, প্রথম ক্লাস, ওরিয়েন্টেশান, শান্ত চত্তর, শহীদ মিনার, সাইন্স ফ্যাক্লাটি,কাঠাল তলা,জান্নাত/বিসমিল্লাহ, চায়ের গলি, বন্ধু-বান্ধবের কলরব, হাসি,রাগ,অভিমান….। সিলেটের সেই শিক্ষা সফর যা আমি কখনোই ভুলবো না। জীবনের এ পর্য়ায়ে এসে অনেকেই হয়ত হিসেব করবে লাভ-ক্ষতির সমীকরন।
caller_get_posts
is deprecated. Use ignore_sticky_posts
instead. in /home/somoynewsbd/public_html/wp-includes/functions.php on line 5667caller_get_posts
is deprecated. Use ignore_sticky_posts
instead. in /home/somoynewsbd/public_html/wp-includes/functions.php on line 5667
Leave a Reply