মঞ্জুরআহমেদ: এভারকেয়ার হাসপাতালের প্রফেসর ডা. মো. মাসুদ কামাল খান ও তার সহযোগিদের চিকিৎসায় অবহেলার কারণে গত ১৭ আগস্ট ডায়ালাইসিস করার সময় শরীর থেকে অতিরিক্ত পানি বের করায় ডা. খালেদা হোসেনের মৃত্যু হয়। গতকাল ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশন মিলনায়তনে মঙ্গলবার সকালে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
উক্ত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, ডা. এ.বি.এম আব্দুল হাকিম মিয়া। তিনি বলেন, আমি একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক হওয়ায় আমি নিজে সাজেশন দিলেও তা অমান্য করে আমার স্ত্রীকে তিনি মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেন। এ ব্যাপারে আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কাছে ওই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে ওই চিকিৎসকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। তিনি আরওবলেন, আমি ডা. এ.বি.এম আব্দুল হাকিম মিয়া (মেডিসিন ও হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ) আপনাদের সদয় অবগতির জন্য জানাচ্ছি যে, এভারকেয়ার হাসপাতালের চিকিৎসক প্রফেসর ডা. মাসুদ কামাল খাঁনের অবহেলা ও ভুল চিকিৎসার কারণে স্ত্রী ডা. খালেদা হোসেনের মৃত্যুর হওয়ার ঘটনা জানাতে উপস্থিত হয়েছি। ডা. খালেদা হোসেন (৬৬), বিগত এক বছরযাবত এভারকেয়ার হাসপতালে সপ্তাহে দুইদিন (শনি ও মঙ্গলবার) ডায়ালাইসিস নিচ্ছিলেন। তার ডানদিকের গলায় একটা পাম ক্যাথিটার লাগানো আছে, যার মাধ্যমে তার ডায়ালাইসিস হয়। বিগত ১৩ জুলাই তার এলোমেলো কথা, কাশি ও কফ নিয়ে এভারকেয়ার হাসপাতাল মেডিকেলের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। একজন ইন্ডিয়ান নেফ্রোলোজিস্ট ডা. এ্যালেন গোভান ভেরাপানের অধীনে তাকে ভর্তি করা হয়। সে ১৫ আগস্ট ৪/৫ দিনের ছুটি নিয়ে ভারতে যান। যাবার সময় তিনি একই হাসপাতালের নেফ্রোলোজিস্ট ডা. মাসুদ কামাল খাঁনের উপর দায়িত্ব দিয়ে যান। ১৬ আগস্ট সকাল সোয়া ৯টার পরিবর্তে আমি সাড়ে ৯টার সময় ওই হাসপাতালে পৌঁছাই। আইসিইউতে দায়িত্বরত সিকিউরিটি গার্ডের কাছে জানতে পারি মাসুদ কামাল খান রোগীর রাউন্ড সকাল সোয়া ৯টায় শেষ করে তার ৮তলার চেম্বারে রয়েছেন। তার এসিস্ট্যান্টের সাথে কথা বললে সে ৮তলায় তার চেম্বারে গিয়ে আমাকে দেখা করতে বলেন। তখন আমি ৮ তলায় মাসুদ কামাল খাঁনের সাথে কথা বলার জন্য অনুমতি চাই। আমাকে বসতে বলে রোগীর ইউরিয়া ও ক্রিয়েটিনিন লেবেল কত আছে তা জানায় এবং আমার সাথে হ্যান্ডশেক করে রুম থেকে সঙ্গে সঙ্গে বের করে দেয়া হয়। কোন কিছু জানতে হলে নিচে জুনিয়র ডাক্তারদের সাথে কথা বলে জানাতে বলা হয়। তার এমন রুঢ় আচরণে আমি হতভম্ব হয়ে যাই । তিনি আমার ভর্তি করা রোগী ডা. খালেদা হোসেন সম্পর্কে কোন কথা বলার সুযোগ বা সময় দেননি। তিনিও খালেদা সম্পর্কে কোন কথা বলেননি । স্ত্রী ডা. খালেদা হোসেন অন্য রোগীদের মত নয়। তার হার্টে ৩/৪টি রিং পরানো আছে। সে এই কারণে অন্য রোগীর মত বেশি পানি বের করতে পারে না। সে ২০০/২০০ মিলির বেশি পানি বের করলে অসুস্থ্য হয়ে পড়ে। গত ১৭ আগস্ট সকাল সোয়া ৯টায় দোতলার আইসিইউর সামনে মাসুদ কামাল খাঁনের সাথে দেখা করি। সে আমাকে জানায়, আপনার রোগীর নিউমোনিয়া নিয়ন্ত্রণে এসে গেছে। তাকে আজ আইসিইউ থেকে এইচডিইউতে ট্রান্সফার করা হবে। সকালে ডায়ালাইসিস চলছিল। আমি তাকে অতিরিক্ত পানি বের করতে নিষেধ করি। তাকে জানাই ২০০/৩০০ মিলির বেশি পানি বের করলে সে অসুস্থ্য হয়ে পড়ে। অতীতে এরকম ঘটনা কয়েকবার ঘটেছে। কিন্তু সে আমার কথায় কোন গুরুত্ব দেয়নি। বেলা ১/২টার দিকে আমাকে টেলিফোন করলে আমি ওই হাসপাতালে ছুটে যাই এবং আমার স্ত্রী ডা. খালেদা হোসেনকে মৃত দেখতে পাই। এ সময়ই আইসিইউর একজন স্টাফ আমাকে জানায় ডায়ালাইসিসের সময় ২ লিটার পানি বিবেচনাহীনভাবে বের করা হয়।
গোপন অন্য এক সূত্র থেকেও ২ লিটার পানি বের করার কথা জানতে পারি । তার ফাইলে লেখা আছে ডায়ালাইসিসের সময় দ যেন কোন পানি বের করা না হয়। এরপরও কারো পরামর্শ ও ফাইলের লেখার প্রতি কর্ণপাত না করে অসুস্থ্য শরীরে ২ লিটার পানি বের করার কারণে আমার স্ত্রী খালেদার মৃত্যু হয়েছে। এটা অবহেলাজনিত কারণে হত্যার শিকার হয়েছে, যা সাধারণ মৃত্যু নয়। আমি একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক হয়েও এভারকেয়ার হাসপাতালের ওই চিকিৎসকের কারণে আমার স্ত্রীকে বাঁচাতে পারিনি ৷ আমি আপনাদের মাধ্যমে এভারকেয়ার হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. মাসুদ কামাল খাঁনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি জানান।
caller_get_posts
is deprecated. Use ignore_sticky_posts
instead. in /home/somoynewsbd/public_html/wp-includes/functions.php on line 5667caller_get_posts
is deprecated. Use ignore_sticky_posts
instead. in /home/somoynewsbd/public_html/wp-includes/functions.php on line 5667
Leave a Reply