1. admin@somoynewsbd.net : admin :
সোমবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:২২ অপরাহ্ন

কুমিল্লা-১১ আসনে পরিবর্তনের আভাস, আলোচনায় নতুন মুখ!

  • সময়: শুক্রবার, ১৭ নভেম্বর, ২০২৩
  • ১২৪ View

নিজস্ব প্রতিবেদক,কুমিল্লা

তফসিল ঘোষণার মধ্য দিয়ে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দামামা বেজে উঠেছে। নির্বাচন বানচালে ছিল দেশি-বিদেশি নানা ষড়যন্ত্রের মধ্যে তফসিল ঘোষণায় আনন্দের জোয়ার বইছে আওয়ামী লীগসহ মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তির দলগুলোর মধ্যে। এরই ধারাবাহিকতায়, তফসিল ঘোষণার পরেই দেশের অন্য সংসদীয় আসনের মতো কুমিল্লা-১১ (চৌদ্দগ্রাম) আসনেও জমে উঠছে নির্বাচনী রাজনীতি। বিশেষ করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশীরা এরই মধ্যে মাঠে নেমেছেন। চালাচ্ছেন জোর প্রচার প্রচারণা।

আসনটি অনেক দিন ধরে এক হাতে শাসন করেছেন বর্তমান এমপি মজিবুল হক। কিন্তু গত পৌরসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কোন্দল প্রকাশ্য রূপ নেয়। বিগত ৬ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকির প্রতিবাদে এম তমিজ উদ্দিন ভূঁইয়া সেলিম এর নেতৃত্বে চৌদ্দগ্রামের সবর্ত্র আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সমাবেশ করতে গেলে সংসদ সদস্য মজিবুল হকের অনুসারীরা তাঁদের উপর অতর্কিত হামলা করে। তিন ঘণ্টার বেশি সময় বন্ধ ছিল ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যান চলাচল।

স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা জানান,সংঘর্ষের ঘটনাকে কেন্দ্র করে এবার দলের তৃণমূল নেতাদের আস্থা হারিয়েছেন মুজিবুল হক। এই সংঘর্ষ এবং দলে বিএনপি-জামায়াত অনুপ্রবেশের কারণে ভাটা পড়েছে সংসদ সদস্য মজিবুল হকের রাজনৈতিক জনপ্রিয়তা। দলে তৈরি হয়েছে তাঁর শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী। এবার এই আসনটি পরিবর্তন হতে পারে। আসবে নতুন মুখ। এমনটাই ধারণা তৃণমূল নেতাকর্মীদের এবং স্থানীয় আওয়ামী কর্মী সমর্থকদের।

কুমিল্লার একাধিক নেতার সাথে কথা বলে জানা গেছে, এবার হেভিয়েট প্রার্থীর মধ্যে রয়েছে আসনটি মুজিবুল হক ছাড়া আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় শ্রম ও জনশক্তিবিষয়ক কেন্দ্রীয় উপকমিটির সদস্য তমিজ উদ্দিন ভুঁইয়া সেলিম ও চৌদ্দগ্রাম উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুস সোবহান ভুঁইয়া হাসান। তবে গত ৬ জুন সংসদ সদস্য মজিবুল হকের অনুসারীদের সাথে চৌদ্দগ্রাম আওয়ামী নেতাকর্মীদের যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয় তা প্রত্যক্ষ করেছেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী। ফলে কেন্দ্রীয় নেতারা ধরেই নিয়েছেন কপাল পুড়তে পারে মুজিবুল হকের।

কেন্দ্র থেকে চৌদ্দগ্রাম পর্যন্ত সর্বত্রই আলোচনায় রয়েছে তমিজ উদ্দিন ভুঁইয়া সেলিম। কেন্দ্রীয় বেশ কয়েকজন নেতার সাথে কথা বলে জানা গেছে, কুমিল্লা-১১ আসনটিতে পরিবর্তন হতে পারে। শক্ত এবং জনপ্রিয় ব্যক্তিকে চায় কেন্দ্র। তবে সব কিছুই নির্ভর করছে প্রধানমন্ত্রী ও দলের সভানেত্রীর সিদ্ধান্তের উপর।

জানা গেছে, দলে এবং কেন্দ্রে ব্যাপক আলোচনায় থাকা এম তমিজ উদ্দিন ভূঁইয়া সেলিম ব্যক্তিগতভাবে বয়স্ক ব্যক্তিদের প্রতিমাসে প্রায় ৮ লাখ টাকার আর্থিক অনুদান দেন। তিনি কয়েক হাজার বেকারের কর্মসংস্থান করেছেন। নিজের নির্বাচনি এলাকায় গার্মেন্টস করেছেন এবং নতুন গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠা করছেন যাতে এলাকার নিন্ম বৃত্ত ও শিক্ষিত বেকারদের কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়। এছাড়াও মসজিদ মাদ্রাসা ও স্কুল কলেজে আর্থিক অনুদান দিয়েছেন এবং দিচ্ছেন।যে সকল শিক্ষার্থীরা অর্থের অভাবে পড়াশোনা ছাড়তে বসেছিলেন তাদের পড়াশোনার দায়িত্ব নিজে কাঁধে নিয়েছেন। ফলে দল মত নির্বিশেষে স্থানীয়দের মাঝে ব্যাপকভাবে আলোচিত তিনি।

এম তমিজ উদ্দিন ভূঁইয়া সেলিম বলেন, আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একজন পরীক্ষিত কর্মী। দলের দুর্দিনে অনেক মামলা হামলার শিকার হয়েছি। দল ক্ষমতায় থাকাকালীন চৌদ্দগ্রামে আওয়ামী লীগের অনেক ত্যাগী নেতাকে অবমূল্যায়ন করা হয়েছে এবং তাদের ওপর মামলা-হামলাও হয়েছে। আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে আমি আওয়ামী লীগ থেকে নৌকার মনোনয়ন চেয়েছি। আমি বিশ্বাস করি আমার ব্যক্তিগত এবং দলীয় কর্মকাণ্ডে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় সভানেত্রী আমাকে মূল্যায়ন করবেন। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে আমি আওয়ামী নেতাকর্মীদের মধ্যে কোন কোন্দল দেখতে চাই না। আমাদের একটাই পরিচয় আমরা আওয়ামী লীগ এবং আমাদের প্রতিক নৌকা।

উল্লেখ্য, রাজনৈতিক অবস্থান এবং ত্যাগকে পুঁজি করে ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়ে প্রথমবারের মতো কুমিল্লা-১১ (চৌদ্দগ্রাম) আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন মুজিবুল হক। পরবর্তীতে ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালে পুনরায় এমপি নির্বাচিত হয়ে মোট ৪বার সংসদ সদস্য হন তিনি। হুইপ, ধর্ম বিষয়ক ও রেলপথের মতো গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করেন। তবে সম্প্রতি স্থানীয় সরকার নির্বাচনে মনোনয়ন বাণিজ্য, অনিয়ম, দলীয় নেতাকর্মীদের মামলা-হামলা, স্বজনপ্রীতি এবং একনায়কতন্ত্রের অভিযোগ উঠেছে এই এমপির বিরুদ্ধে। এছাড়া টাকার বিনিময়ে জামায়াত-বিএনপি ও ভিন্ন মতাদর্শের রাজনৈতিক দলের লোকদের আওয়ামী লীগে স্থান দিয়ে বিভিন্ন পদ-পদবি দিয়েছেন তিনি। এমপির হয়রানির হাত থেকে রেহাই পাননি কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নেতারাও। তার বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা আওয়ামী লীগে সৃষ্টি হয়েছে বিভক্তি।

নির্বাচন কমিশনের সর্বশেষ তথ্য মতে, এবং কুমিল্লা-১১(২৫৯) চৌদ্দগ্রাম আসনে ৩ লাখ ৯১ হাজার ৮৮১ জন, এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৫২৩ জন এবং নারী ভোটার ১ লাখ ৯১ হাজার ৩৫৫ জন। এছাড়া জেলায় ২৮ জন হিজড়া ভোটার রয়েছে।

0Shares

Deprecated: File Theme without comments.php is deprecated since version 3.0.0 with no alternative available. Please include a comments.php template in your theme. in /home/somoynewsbd/public_html/wp-includes/functions.php on line 5583

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© Somoynewsbd
Theme Customized By BreakingNews