মঞ্জুর:
সচেতন প্রকৌশলী সমাজ ১লা মার্চ ২০২৫ জাতীয় প্রেসক্লাবে ইনিস্টিটিউশন অফ ইন্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (আইইবি) এর অবৈধ কমিটি বাতিলের দাবিতে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, প্রকৌশলী সৈয়দ মাহফুজ আহম্মেদ। তিনি বলেন দি ইনিস্টিটিউশন অফ ইন্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (আইইবি) The Societies Registration Act, 1860 Gi বিধান মোতাবেক ৭ মে ১৯৪৮ ইং সালে প্রতিষ্ঠিত হয়, যা দেশের সকল প্রকৌশলীদের একটি অরাজনৈতিক জাতীয় পেশাজীবি প্রতিষ্ঠান। আইইবি-তে চারটি স্বাধীন অঙ্গ রয়েছে। এগুলো হল: ইঞ্জিনিয়ারিং এবং কারিগরি শিক্ষা অ্যাক্রেডিটেশন বোর্ড, বাংলাদেশ প্রফেশনাল ইঞ্জিনিয়ার্স রেজিস্ট্রেশন বোর্ড, ইঞ্জিনিয়ারিং স্টাফ কলেজ বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশ ওকুপেশনাল সেফটি বোর্ড। IEB-এর নেতৃত্ব একটি নির্বাচিত কার্যনির্বাহী কমিটি দ্বারা পরিচালিত হয়, যা প্রতি দুই বছর পর পর সদস্যদের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হয়। IEB – এর নেতৃত্বে প্রধানত অভিজ্ঞ এবং দক্ষ ইঞ্জিনিয়াররা থাকেন, যারা পেশার উন্নয়ন ও মান নিশ্চিত করার জন্য নিবেদিত। ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড এডুকেশন বোর্ড (BAETE), ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (IEB), ঢাকা, বাংলাদেশ ওয়াশিংটন অ্যাকর্ডের একটি পূর্ণাঙ্গ স্বাক্ষরকারী এবং সম্প্রতি ১২ জুন, ২০২৪ তারিখে এটি সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ওয়াশিংটন অ্যাকর্ডের ২৩টি পূর্ণাঙ্গ স্বাক্ষরকারী সর্বসম্মতিক্রমে এই সিদ্ধান্তটি অনুমোদন করেছে। ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (IEB), ওয়াশিংটন অ্যাকর্ড (WA) এর সদস্য, যা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ, বিশেষ করে ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষা এবং পেশাদার মানের বিশ্বব্যাপী স্বীকৃতির প্রেক্ষাপটে। IEB যদি সঠিক গণতান্ত্রিক নেতৃত্বে কাজ করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে ওয়াশিংটন অ্যাকর্ড সচিবালয় সহ স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক উভয় পক্ষের কাছেই এটি বিশ্বাসযোগ্যতা হারানোর ঝুঁকিতে পড়ে। অগণতান্ত্রিকভবে IEB পরিচালিত হলে ওয়াশিংটন অ্যাকর্ডের কঠোর প্রয়োজনীয়তা পূরণে ব্যর্থতার দিকে পরিচালিত করতে পারে, যার ফলে সদস্যপদ স্থগিত বা বাতিল হতে পারে। গত বছর ধরে স্বৈরশাসন অপশাসনের ফলে প্রত্যেকটি সরকারী লপ্রতিষ্ঠানসহ পেশাজীবি প্রতিষ্ঠান সমূহ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্ত দেশের সকল অবকাঠামো যেমন ভবন ব্রীজ রাস্তাঘাট রেল সিভিল এভিয়েশন বিদ্যুত গ্যাস পেট্রোলিয়াম শিল্প কলকারখানা তথ্য প্রযুক্তি জলবায়ু পরিবর্তনসহ সকল ক্ষেত্রে প্রকৌশলীদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।প্রকৌশলীদের পেশার মান উন্নয়নের উপর দেশের আর্থ সামাজিক উন্নয়ন নির্ভরশীল।কিন্তু দলীয লেজুরবৃত্তির কারনে বংগবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদের নামে আইইবির পদ ব্যবহার করে দুর্নীতি তদবিরবাজী চাঁদাবাজী দখলবাজী টেন্ডারবাজীর মাধ্যমে গত ১৬ বছরে আইইবিকে একটি অকার্যকর প্রতিষ্ঠানে পরিনত করেছে।ছাত্র জনতা ফ্যাসিবাদ বিরোধী সকল শক্তির সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এবং সর্বশক্তিমান মহান আল্লাহর অশেষ রহমতে দেশবাসী
স্বৈরশাসক দোষরদের দেশ ছেড়ে পালাত বাধ্ছতারই ধারাবাহিকতায় দেশের প্রকৌশলীদের একমাত্র জাতীয় প্রতিষ্ঠা ইনিস্টিউশন অফ ইন্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ আইইবি অবৈধভাবে বিগত ফ্যাসিবাদের দোসররা বর্তমানে পলায়নরত আছে।এই অচলবস্থা নিরসনে আমরা আইইবির গঠনতন্ত্রের অনুযায়ী ২৬০জন সদস্যগনের স্বাক্ষর<গ্রহন <করে রিকুইজিশন সভা আহবানের জন্য প্রেসিডেন্আ ইইবি অনুরোধ করা হয়।যার কোন প্রত্যুত্তর পাওয়া যায় নাইসা ইতিমধ্যে AEB এর তিনজন সদস্য অন্য প্রতিষ্ঠান Association of Engineers Bangladesh (AEB) এর প্যাড ব্যবহার করে ২৩ অক্টোবর তারিখে কাল বেলা পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি জারি করে মাত্র এক দিনের ব্যবধানে ২৪ অক্টোবর তারিখে একটি EOGM (Ordinary General Meeting) আইইবি প্রাংগনে আহবান করে এবং অবৈধভাবে চর দখলের মত প্রেসিডেন্ট, সাধারন সম্পাদক সহ ১০ সদস্য বিশিষ্ট আইইবির সদর দপ্তরের এবং চার সদস্যের আইইবি ঢাকা কেন্দ্রের কমিটি গঠন করে। নিম্নোক্ত কারনে ফ্যাসিবাদী কায়দায় করা কমিটি সম্পূর্ণ অবৈধ: ১। আইইবি গঠনতন্ত্রের চ্যাপ্টার ৬ এর ৫২ উপ-বিধি অনুযায়ী কেবল প্রেসিডেন্ট আইইবি EOGM বা Requisition meeting ডাকতে পারবে অন্য কেহ নয়। তাছাড়া EOGM এর সভাপতি নির্বাচনে Bye laws এর চ্যাপ্টার ৬ এর ৩৯ ধারা অনুসরন করা হয় নাই। ২। আইইবি গঠনতন্ত্রের চ্যাপ্টার ৬ এর৫১ উপ- বিধি অনুযায়ী কমপক্ষে ২১ দিন পূর্বে সকল সদস্য এবং সহযোগী সদস্যগনে সভার নোটিশ পাঠাতে হবে। অথচ EOGM আহবানকারীরা ফ্যাসিবাদী কায়দায় কোন নোটিশ না পাঠিয়ে এক দিন পূর্বে একটি পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রচার করে সভা আহবান করেছে যা সম্পূর্ণ অবৈধ। একদিনের নোটিশ EOGM আহবান কার্যকরভাবে অধিকাংশ সদস্যদের অংশগ্রহণের ন্যায্য সুযোগ অস্বীকার করেছে। ৩। আইইবি গঠনতন্ত্রের চ্যাপ্টার ৬ এর ৫২ উপ-বিধি অনুযায়ী EOGM এ শুধু একটি এজেন্ডা থাকবে। কিন্তু EOGM সভার নোটিশে, এমনকি সভায় ব্যবহৃত ব্যানারেও কোন এজেন্ডা ছিল না যা সম্পূর্ণ বিধিবহির্ভূত। তাছাড়া ব্যানারে আইইবির কোন লোগো ছিল না। ৪। আইইবি গঠনতন্ত্রের চ্যাপ্টার ৬ এর ৫২ উপ-বিধি অনুযায়ী EOGM এ কর্পোরেট সদস্যদের ভোটের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে। কিন্তু ভোট ব্যতীত বক্তব্য প্রদানকৃত সদস্যদের মতামতের তোয়াক্কা না করে হীন স্বার্থ চরিতার্থের জন্য ফ্যাসিবাদী কায়দায় অবৈধভাবে মনগড়া কমিটি প্রকাশ করা হয়। ৫। Bye laws এর চ্যাপ্টার ৫ এর ৩০ ধারার ব্যতয় ঘটিয়ে Central Election Committee ব্যতীত অবৈধভাবে চর দখলের মত প্রেসিডেন্ট, সাধারন সম্পাদক সহ ১০ সদস্য বিশিষ্ট আইইবির সদর দপ্তরের এবং চার সদস্যের আইইবি ঢাকা কেন্দ্রের কমিটি গঠন করে প্রচার করে যারা সকলেই AEB এর সদস্য। ৬। অবৈধভাবে ঘোষিত প্রশাসন ও অর্থ বিভাগের সহ-সভাপতি (ইঞ্জি. এটিএম তানভীরুল হাসান তমাল, F/8650) ইতিপূর্বে কেন্দ্রীয় কাউন্সিলের সদস্য না হওয়া সত্ত্বেও মনোনীত করা হয়েছিল, যা IEB- এর সাংবিধানিক প্রয়োজনীয়তার (Chapter V, 47b) এর স্পষ্ট লঙ্ঘন একইভাবে ঢাকা কেন্দ্রের চেয়ারম্যান ইঞ্জি. হেলাল উদ্দিন তালুকদার (F/7775), ইঞ্জি. আবদুল্লাহ আল মামুন, (M/32032 ) Constitution এর Chapter V, এর 47 e, f শর্ত লংঘন করে অবৈধভাবে নির্বাচিত ঘোষনা করা হয়েছে। ৭। বাংলাদেশ সরকার প্রতিবছর অর্থ মন্ত্রনালয়ের মাধ্যমে ‘দি ইনস্টিটিউশন অফ ইন্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (আইইবি)’ কে গবেষনাসহ বিভিন্ন খাতে আর্থিক বরাদ্দ প্রদান করে থাকে, যার অপচয় ঘটতে পারে অনৈতিকভাবে গঠিত কমিটির মাধ্যমে। গত ১৬ বছরের অভিজ্ঞতায় সাধারন প্রকৌশলী সমাজ আইইবিকে দলীয় লেজুরবৃত্তের উর্ধ্বে পেশাজীবি বান্ধব প্রতিষ্ঠান হিসেবে দেখতে চায়। পূর্বের ন্যায় রাজনৈতিক দল এবং আইইবির পদ ব্যবহার করে সরকারি বিভিন্ন বিভাগে পোস্টিং/পদন্নতির অনৈতিক তদবীর, চাঁদাবাজী, টেন্ডারবাজী সাধারন প্রকৌশলী সমাজ দেখতে চায় না। সাম্প্রতিক ছাত্র-নেতৃত্বাধীন এবং গণতান্ত্রিক চর্চা পুনঃপ্রতিষ্ঠার পক্ষে জনগণের আন্দোলনের সাথে, এখন IEB- এর মূলনীতিগুলি পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার একটি নতুন সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু অবৈধভাবে দখলকারী বর্তমান কমিটি সাধারন প্রকৌশলীদের পক্ষে কোন ভূমিকা রাখতে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ। উদাহরনস্বরুপ, উপদেষ্টা পরিষদে এবং প্রশাসনিক সংস্কার কমিটিতে কোন প্রকৌশলীকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি, ২৫ ক্যাডারের বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন, চলতি দায়িত্ব প্রদান করে দীর্ঘ দিন পদন্নতি বিলম্বিত করা, কারিগরী পদে অযৌক্তিকভাবে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের পদায়ন, শুধুমাত্র প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকরতাদের ভূতাপেক্ষ পদন্নতি প্রদান করা, সম্প্রতি কুয়েট এ দুই পক্ষ ছাত্রদের সংঘর্ষ ও হল বন্ধ ইত্যাদি বিষয়ে আইবির কোন ভূমিকা দেখা যাচ্ছে না। এইভাবে আইইবি একটি অকার্যকর প্রতিষ্ঠানে পরিনত হতে যাচ্ছে। এমতাবস্থায়, আমরা আইইবতে অবৈধভাবে গঠিত কমিটি বাতিল করে প্রশাসক নিয়োগ করে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত করার জন্য সরকারি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আহবান জানাই। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সাবেক সভাপতি প্রকৌশলী আ ন ম আক্তার হোসেন, প্রকৌশলী আব্দুর রউফ, প্রকৌশলী মিয়া মোঃ কাইয়ুম, প্রফেসর প্রকৌশলী নুরুল ইসলাম, প্রকৌশলী ফাহিম, প্রকৌশলী ইমরান প্রমুখ।