রিসাত রহমান স্বচ্ছ, সাঃ সম্পাদক, জবি রিপোর্টার্স ইউনিটিঃ
শিক্ষাজীবনের পাশাপাশি গুটি গুটি পায়ে উদ্যোক্তা জীবনের তিন বছর পার ফেলেছেন ইরা। যদিও উদ্যোক্তা হবে এই ভাবনা নিয়ে তার উদ্যোক্তা জীবনের যাত্রা শুরু হয়নি। তবে নিজের উদ্যোগে কিছু করবে এই সুপ্ত ইচ্ছাটা তার মনে বরাবরই ছিলো। আর্ট ওয়ার্ক, ক্রাফটিং রঙ তুলির সাথে তার ভাব ছিলো ছোট্টবেলা থেকেই। ক্যাম্পাস লাইফ শুরু হবার পর নিজের খরচ নিজেই বহন করবে এমন একটা মানসিকতা থেকেই ইরার উদ্যোক্তা জীবনের যাত্রা।
সেই থেকে ২০১৯ সালের এপ্রিল মাসে যাত্রা শুরু হয় ইরার ছোট্ট অনলাইন পেইজ “কাঠপোকার” (fb.com/kathpokaa)। যেখানে সে কাজ করতো কাঠের তৈরি হ্যান্ডপেইটেড গহনা নিয়ে। সাথে আরো হ্যান্ডপেইন্টেড দুল, আংটি, চাবির রিং, টিপ,ব্রেসলেইট এবং অন্যান্য এক্সেসরিজ নিয়েও কাজ করে। নিজের জমানো মাত্র ১৫০০ টাকা পুঁজি দিয়েই পেইজের জন্য কেনাকাটা শুরু করেছিল। ফ্যামিলিতে খুব একটা সাপোর্ট না পেলেও ইরার মা আর ডিপার্টমেন্টে বন্ধু দিপুর সহযোগিতা পেয়েছিল বরাবরই। ধীরে ধীরে পরিবারের সকলে সাপোর্ট দিতে শুরু করে।
শুরুর দিকের কথা বলতে গিয়ে ইরা বলেন, রং তুলি দিয়ে নিজেই কিছু ডিজাইন করলাম যেটা গতানুগতিক ধাঁচ থেকে কিছুটা আলাদা, কাঁপা-কাঁপা হাতে নিজেরাই আনাড়ি হাতের ফটোগ্রাফি করে পেইজে আপ্লোড করি। তার কিছুক্ষনের মাঝেই সেই প্রোডাক্টের অর্ডার আসতে শুরু করে। কাজগুলো নিয়ে ক্যাম্পাসের বন্ধুবান্ধব, সিনিয়র, পরিচিত জনদের কাছে বেশ সাড়া পাই। সবার উৎসাহে কাজ করার আগ্রহ বেড়ে যায়, তারপর থেকে আর থামতে হয়নি আমার।
মাঝে করোনা পরিস্থিতির জন্য কিছুটা ভাটা পরলেও এর মাঝে নতুন উদ্যোমে কাজ শুরু করেছিল। এছাড়াও ধানমন্ডি মাইডাস সেন্টারে চারুকলা আয়োজিত ‘চৈতালি মেলা’ এবং উই ক্যান আয়োজিত ‘সামার ফেস্টে’ কাঠপোকা প্রথমবারের মত অফলাইন মেলায় অংশগ্রহণ করে। অফলাইন এক্সিবিশনেও ক্লায়েন্টদের অভূতপূর্ব সাড়া পেয়েছিল। এতে তার কাজের প্রতি আত্নবিশ্বাস দ্বিগুন হয়ে যায়।
ইরার উদ্যোক্তা জীবন নিয়ে কতটা সন্তুষ্ট সে জানতে চাইলে বলেন, আমি সত্যিকার অর্থে সন্তষ্ট। প্রতিদিন নতুন সব ডিজাইন নিয়ে কাজ করা, ভাবনাগুলোকে কাজের মাধ্যমে বাস্তবে রুপ দেয়া, প্যাকেজিং, ক্লায়েন্টদের হাত অবধি যত্ন নিয়ে জিনিস পৌঁছে দেয়া এসব কাজ গুলো করতে গিয়ে কাজের উপর মায়া পরে গেছে। ইচ্ছা আছে ভবিষ্যতে আরো কর্মী নিয়োগ দেয়ার এবং কাঠপোকার নিজস্ব একটা আউটলেট দেয়ার।
অনেকেরই একটা ধারনা আছে উদ্যোক্তাদের নিয়ে যে তারা চাকুরিজীবীদের মত গৎবাঁধা সময় নিয়ে কাজ করেনা, ব্যক্তিস্বাধীনতা নিয়ে কাজ করেন। এটা সত্য হলেও ইরা মনে করেন, উদ্যোগকে সফল করতে গেলে তার পেছনে দ্বিগুন শ্রম ও সময় দিতে হয়। যার কোন বাঁধাধরা নিয়ম বা সময় নেই।
যে যার ভালোলাগার জায়গাটা নিয়ে কাজ করলে সেই কাজ নিয়ে অনেকদূর এগিয়ে যেতে পারে বলে ইরা বিশ্বাস করেন। আনন্দ নিয়ে কাজ করলে সব কাজই সহজ হয়ে যায়, তাতে অবসাদ আসে না বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আধুনিক ভাষা ইন্সটিটিউট থেকে ইংরেজি ভাষা বিভাগে অনার্স পড়ুয়া এই শিক্ষার্থী।
caller_get_posts
is deprecated. Use ignore_sticky_posts
instead. in /home/somoynewsbd/public_html/wp-includes/functions.php on line 5667caller_get_posts
is deprecated. Use ignore_sticky_posts
instead. in /home/somoynewsbd/public_html/wp-includes/functions.php on line 5667
Leave a Reply