নিজস্ব প্রতিবেদকঃ “””তুমি নড়াইলের গর্ব,তুমি অহংকার।তুমি নড়াইলকে দিয়েছো নতুন জন্ম ভূমি,তুমি সৃষ্টি করেছো,আরেক প্রজন্মের ইতিহাস, তোমার দামাল ছেলেরা তাই তোমাকে নাম দিয়েছে বাংলার টাইগার।”””
মাশরাফি বিন মর্তুজা, একজন জীবন্ত কিংবদন্তি। ভাগ্য বেশ কয়েকবারই তাঁকে থামিয়ে দিতে চেয়েছিল। রাতের পর রাত চোখের জল মুছেও নতুন উদ্যমে ছুটেছেন তিনি। নিয়তিকে হারানোর জন্য চোট নামক শব্দটির সঙ্গে করেছেন যুদ্ধ। এই যুদ্ধের একটা সময় তো চিকিৎসক বলেই দিয়েছিলেন হাঁটুতে অস্ত্রোপচারের আর জায়গা নেই। তবুও তিনি থেমে যাননি নিজের সঙ্গে নিজের লড়াইয়ের মাধ্যমে নিজেকে নিয়ে গেছেন বিশ্বকাতারে। আর বাংলাদেশের ক্রিকেটে সূচনা করেছেন নতুন এক অধ্যায়। সেই মাশরাফি বিন মর্তুজা কৌশিক দেখতে দেখতে তার জীবনের ৩৫টি বসন্ত পার করে ফেলেছেন। আজ তার ৩৯তম জন্মদিন। শুভ জন্মদিন মাশরাফি।
১৯৮৩ সালের আজকের এই দিনে নড়াইলের মাটিতে জন্ম হয় মাশরাফি বিন মর্তুজার। মজার বিষয় হলো এই দিনটাতে তার একমাত্র ছেলে সাহেল মর্তুজারও জন্মদিন। ২০১৪ সালের ৫ অক্টোবরেই পৃথিবীর আলো দেখে সাহেল। শুভ জন্মদিন মাশরাফি জুনিয়র।পরিবারের বড় ছেলে মাশরাফি ছোট বেলা থেকেই ছিলেন দুরন্ত। ছেলেকে দস্যিপনা থেকে কিছুতেই আটকাতে পারতেন না বাবা গোলাম মুর্তজা স্বপন ও মা হামিদা বেগম। সারাদিন ব্যাডমিন্টন আর চিত্রা নদীতে সাঁতার কাটা সেদিনের ছোট্ট ছেলেটি কখন যে ব্যাট-বলের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন তা হয়তো মাশরাফির নিজেরও জানা নেই।
১১ বছর বয়সেই নড়াইল ক্রিকেট ক্লাবে খেলার সুযোগ হয়ে যায় মাশরাফির। ১৯৯১ সালে মাগুরা হয়ে বিকেএসপির ক্যাম্প। নিজের প্রতিভার প্রমাণ দিয়ে জায়গা মেলে খুলনা বিভাগীয় অনূর্ধ্ব-১৭ দলে। তারপরেই দেখা মেলে অন্য এক মাশরাফির।২০০১ সালের ৮ নভেম্বর ছিল কৌশিকের ক্রিকেটে অভিষেক হওয়ার সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে নিজের প্রথম টেস্টেই বিশ্বকে নিজের আগমনী বার্তা বুঝিয়ে দেন। কিন্তু পরের বছরই নিয়তি তাকে আটকে দিল। গাছে থেকে পড়ে যেতে হয় চেন্নাইতে অপারেশনের জন্য। পরের বছর আবারও চোট। ছিড়ে যায় লিগামেন্ট।সেই অপরারেশনের সময় ডাক্তার ডেভিড ইয়াং বুঝতে পারেন যে আগের অপারেশনটি ঠিক মত হয়নি। যার জন্য একমাসের মাথায় দুইবার কৌশিককে নিতে হয় ছুরি-কাঁচির নিচে।এই ইনজুরি মাশরাফির জীবন থেকে কেড়ে নিয়েছে অনেক কিছু। এই ইনজুরির জন্যই ২০১১ সালের বিশ্বকাপের সুযোগ মেলেনি তার। জীবনের সেই কঠিন মুহূর্ত থেকে ৩৫ বছর পার করা মাশরাফি এখন অনেকটা পরিনত। জীবন যুদ্ধে টিকে থাকতে ব্যথানাশক ওষুধ আর ইনজেকশনকে নিজের সঙ্গী বানিয়ে ফেলেছেন। ব্যথা নিয়েও দুর্দান্ত গতিতে বল নিয়ে ছুটছেন নড়াইল এক্সপ্রেস। হয়ে উঠেছেন দেশের ক্রিকেটের সবচেয়ে সফল অধিনায়ক।
তার ছোঁয়াতে বদলে যায় বাংলাদেশের ক্রিকেট। একটি প্রেরণার নাম তিনি। পুরো দলের জন্য প্রেরণার বাতিঘরও বলা চলে। কোটি কোটি মানুষের চোখের স্বপ্ন তিনি। দলের যেকোন মুহূর্তে, যেকোনো বিপর্যয়ে তার প্রেরণাতেই জ্বলে উঠে টাইগার স্কোয়াড। একজন পিতার মত আগলে রেখেছেন বাংলাদেশের ক্রিকেটকে। পাশাপাশি নিজের অর্জনের খাতা ভারী করেছেন।ওয়ানডে ক্রিকেটে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ দলকে ৬৪টি ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়েছেন মাশরাফি বিন মর্তুজা। যার মধ্যে ৩৫টি ম্যাচে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। হেরেছেন ২৭টি ম্যাচ। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে মাশরাফি বিন মর্তুজার নেতৃত্বে ২৮টি ম্যাচ খেলে ১০টিতে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। টেস্ট ক্রিকেটে তিনি একটি ম্যাচে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। সেই ম্যাচটিতেই জয় পেয়েছিল বাংলাদেশ।
৩৬তম জন্মদিনে মাশরাফি ভক্তদের হয়তো একটাই চাওয়া থাকবে সুস্থ থেকে তাদের প্রিয় ম্যাশ যেন আরো অনেকটা সময় দেশের ক্রিকেটের সঙ্গে জড়িয়ে থাকতে পারে।
caller_get_posts
is deprecated. Use ignore_sticky_posts
instead. in /home/somoynewsbd/public_html/wp-includes/functions.php on line 5667caller_get_posts
is deprecated. Use ignore_sticky_posts
instead. in /home/somoynewsbd/public_html/wp-includes/functions.php on line 5667
Leave a Reply