অনলাইন ডেস্কঃ২৮ দিনের অধিক সময় ধরে ই-নামজারি মামলা/আবেদনসমূহ অনিষ্পন্ন থাকার কারণ জানতে চেয়ে সংশ্লিষ্ট কালেক্টরদের (জেলা প্রশাসক) কাছে ৬ই ডিসেম্বর ২০২২ তারিখ থেকে পত্র প্রেরণ শুরু করেছে ভূমি মন্ত্রণালয়।
যেসব উপজেলা কিংবা সার্কেল ভূমি অফিসে নামজারিতে ২৮ দিনের অধিক সময় লাগছে সেখানকার দায়িত্বরত সহকারী কমিশনার (ভূমি)দের থেকে ব্যাখ্যা সংগ্রহ করে আগামী ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে তা ভূমি মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করার জন্য সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকদের বলা হয়। ব্যাখা পাওয়ার পর (সাধারণ আবেদনে) নিয়ম অনুযায়ী ২৮ দিনের মধ্যে ই-নামজারি নিশ্চিত করার জন্য প্রযোজ্য যে ব্যবস্থা গ্রহণ করা সমীচীন হবে তা গ্রহণ করবে ভূমি মন্ত্রণালয়।
প্রসঙ্গত, জাতীয় ভূমি সেবা কাঠামো www.land.gov.bd গিয়ে ই-নামজারি ট্যাবে ক্লিক করলেই বিগত ৯০ দিনের জাতীয়, বিভাগ ও জেলাওয়ারী ই-নামজারি আবেদনের সংখ্যা, মঞ্জুরের হার ও গড় নিষ্পত্তি দেখা যাবে। এছাড়া নিজ আবেদনের সর্বশেষ অবস্থা দেখার সুযোগ রেয়েছে। ইতঃপূর্বে ভূমি মন্ত্রণালয় ই-নামজারি ব্যবস্থার জন্য মর্যাদাপূর্ণ ‘ইউনাইটেড ন্যাশনস পাবলিক সার্ভিস অ্যাওয়ার্ড – ২০২০’ অর্জন করেছে।
এর আগে, আবেদনকারীকে আত্মপক্ষের সুযোগ না দিয়ে ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তার প্রতিবেদনের ভিত্তিতে সরাসরি নামাজারি আবেদন না-মঞ্জুর (বাতিল) না করার জন্য সহকারী কমিশনার (ভূমি)দের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়ে গত ৪ই ডিসেম্বর ২০২২ তারিখে এক পরিপত্র জারি করেছে ভূমি মন্ত্রণালয়। ভূমি সচিব মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান পিএএ স্বাক্ষরিত পরিপত্রটিতে ৭ দিনের মধ্যে উপজেলা/সার্কেল ভূমি অফিসে নামজারি বিষয়ক প্রতিবেদন প্রেরণের জন্যেও ইউনিয়ন ভূমি অফিসকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যেন ২৮দিনের মধ্যে নামজারি নিষ্পত্তি করা সহজ হয়।
পরিপত্রে নামজারি কার্যক্রমে ওয়ারিশ সনদ ‘প্রত্যয়ন সিস্টেম’ হতে গ্রহণের ব্যাপারেও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রত্যয়ন সিস্টেমের সাথে নামাজারি সিস্টেমের আন্তঃসংযোগ সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত আপাতত ব্যক্তির মৃত্যুর পর ইস্যুকৃত ওয়ারিশ সনদের মেয়াদ উন্মুক্ত রাখার বিষয়েও পরিপত্রটিতে বলা হয়।
এছাড়া, অধিগ্রহণ কার্যক্রম চলাকালীন স্থাবর সম্পত্তি অধিগ্রহণ ও হুকুম দখল আইনের ৪ ধারা নোটিশ জারির পর প্রযোজ্য ক্ষেত্রে নামজারি করার ব্যাপারেও নির্দেশ জারি করা হয় পরিপত্রে। ৪ ধারা নোটিশ জারির পূর্বে সম্পাদিত দলিলের ভিত্তিতে বা উত্তরাধিকার সূত্রে মালিকানা পরিবর্তিত হলে অধিগ্রহরণের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হিসেবে ক্ষতিপূরণ পাওয়ার স্বার্থে নামজারি করা যাবে মর্মে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে পরিপত্রটিতে।
(পরিপত্র অনুযায়ী বিস্তারিত):
* পরিপত্রে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে নামাজারি আবেদন না-মঞ্জুর না করার বিষয়ে বলা হয়: কিছু কিছু ক্ষেত্রে ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তার প্রতিবেদনের ভিত্তিতে আবেদনকারীকে যুক্তি / তথ্য-উপাত্ত প্রদান করার সুযোগ না দিয়ে সরাসরি না-মঞ্জুরের আদেশ প্রদান করা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে আবেদনকারীকে ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তার প্রতিবেদনে উত্থাপিত সকল ধরনের আপত্তির বিষয়ে আত্মপক্ষের সুযোগ দিতে হবে। তথ্য-উপাত্ত ও আপত্তির বিষয়ে আবেদনকারীর বক্তব্য বিবেচনায় নিয়ে আদেশ প্রদান করতে হবে।
* নামজারি কার্যক্রমে ৭ দিনের মধ্যে ইউনিয়ন ভূমি অফিসের প্রতিবেদনের বিষয়ে বলা হয়: নামজারির আবেদন নিষ্পত্তির সর্বোচ্চ সময়সীমা নির্ধারণ করা হলেও শুনানির প্রয়োজনীয়তা ছাড়া অন্য কোনো পর্যায়ে নথি প্রক্রিয়ায় ন্যুনতম সময় নির্ধারিত নেই বিধায় আবেদনসমূহ নির্ভুলভাবে যতটা সম্ভব দূত নিষ্পত্তি করা যেতে পারে। ইউনিয়ন ভূমি অফিস হতে যথাসম্ভব ক্রমানুযায়ী প্রস্তাবপত্র / প্রতিবেদন সর্বোচ্চ ৭ দিনের মধ্যে প্রেরণ করতে হবে। যদি কোনো প্রস্তাবপত্র প্রদানে যৌক্তিক কারণে অধিক সময় প্রয়োজন হয় অথবা ক্রমানুষায়ী প্রেরণ করা না যায়, তাহলে সুনির্দিষ্ট ব্যাখ্যাসহ সহকারী কমিশনার (ভূমি)’কে প্রাস্তাবপত্র / প্রতিবেদন প্রেরণ করতে হবে।
* নামজারি কার্যক্রমে ওয়ারিশ সনদ বিষয়ে বলা হয়: অনেক সময় ওয়ারিশ সনদ হালনাগাদ নয় মর্মে নামজারি আবেদন বাতিল করা হয়। হালনাগাদের মেয়াদ সম্পর্কে স্পষ্টীকরণ না থাকায় বিভিন্ন ধরণের সিদ্ধান্ত প্রদান করা হচ্ছে৷ এর ফলে নামজারি সেবার মান বিঘ্নিত হচ্ছে। তাই এখন থেকে কোনো ব্যক্তির মৃত্যুর পর ইস্যুকৃত ওয়ারিশ সনদের মেয়াদ উন্মুক্ত থাকবে। সরকারের প্রত্যয়ন সিস্টেমের সঙ্গে নামজারি সিস্টেমের আন্তঃসংযোগ স্থাপিত হলে ওয়ারিশ সনদ প্রত্যয়ন সিস্টেম হতে গ্রহণ করতে হবে। যদি ওয়ারিশ সনদপত্রে উল্লেখিত নামের সাথে দলিলে উল্লিখিত নাম বা নামজারি আবেদনকারীর নামের ভিন্নতা থাকে, তাহলে জাতীয় পরিচয়পত্র/ জন্ম-নিবন্ধন সনদপত্র অনুযায়ী ওয়ারিশ সনদপত্র দাখিল করার জন্য নির্দেশনা প্রদান করতে হবে।
* অধিগ্রহণ কার্যক্রম চলাকালীন নামজারির বিষয়ে বলা হয়: স্থাবর সম্পত্তি অধিগ্রহণ ও হুকুম দখল আইন, ২০১৭-এর ৪ ধারা নোটিশ জারির পর অধিগ্রহণ প্রস্তাবিত জমির নামজারি বন্ধ রাখা যাবে না। নোটিশ জারির পূর্বে সম্পাদিত দলিলের ভিত্তিতে বা উত্তরাধিকার সূত্রে মালিকানা পরিবর্তিত হলে অধিকরণের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হিসেবে ক্ষতিপূরণ পাওয়ার স্বার্থে নামজারি করা যাবে’। আরও বলা হয় ‘স্থাবর সম্পত্তি অধিগ্রহণ ও হুকুম দখল আইন, ২০১৭-এর ধারা ৪ উপধারা ১২ মোতাবেক জেলা প্রশাসক অধিগ্রহণ প্রস্তাবিত জমির ক্রয়-বিক্রয়ের উপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ না করলে উক্ত জমির ক্রয়-বিক্রয় অধিগ্রহণ আইনের ৪ ধারার নোটিশ জারির পরে সম্পাদিত হলেও নামজারি করা যাবে।
caller_get_posts
is deprecated. Use ignore_sticky_posts
instead. in /home/somoynewsbd/public_html/wp-includes/functions.php on line 5667caller_get_posts
is deprecated. Use ignore_sticky_posts
instead. in /home/somoynewsbd/public_html/wp-includes/functions.php on line 5667
Leave a Reply