ঐশ্বর্য সরোয়ার অপূর্ব, জবি প্রতিনিধি:
রায়বেঁশে বা লাঠিখেলা হাজার বছরের বাঙ্গালী ঐতিহ্যের এক অন্যতম নিদর্শন। ব্রিটিশ শাসনামলে অবিভক্ত বাংলার জমিদারেরা নিরাপত্তার জন্য লাঠিয়াল নিযুক্ত করতো। যুদ্ধ নৃত্য হলেও আমাদের দেশীয় আচার উপাচার মিশ্রিত এই পরিবেশনাটি আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতির অংশ। যা পরিবেশিত হয়ে আসছে পহেলা বৈশাখ, চৈত্র সংক্রান্তি, পূজাসহ বিভিন্ন দেশীয় পার্বণে। তারই ধারাবাহিকতায় নববর্ষ উপলক্ষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিবেশিত হয়েছে ‘রায়বেঁশে নৃত্য ও লাঠিখেলা’।
আজ ১লা বৈশাখ (১৪ এপ্রিল) সকাল ১১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা শহীদ রফিক ভবনের উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা এ নৃত্য উপস্থাপন করে। পরিবেশনাটির পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় ছিলেন বিভাগের প্রভাষক কৃপাকনা তালুকদার।
এ যুদ্ধনৃত্য পরিবেশনায় ছিলেন বিভাগের শিক্ষার্থী রকি, মারুফ, অনন্যা, নিশা, রুদ্র, বাবলু, আলম, সৌমিক, ঈশিতা, খুশি, নওমী, সাদিয়া, মুগ্ধ, তাকরিম, মোস্তাকিন, শোভন, সুরাজ, মুস্তাফিজ, অভিজিৎ ও ফিজা। দ্রব্যসামগ্রী নির্মাণে ঈশিতা, প্রকাশনা ও পোস্টার সাদিয়া নিশা। সঙ্গীত পরিবেশনা করেন শোভন, সুরাজ, তাকরিম, অনন্যা, নিশা, মুস্তাফিজ, অভিজিৎ, ফিজা।
নৃত্য পরিবেশনাটির নির্দেশক নাট্যকলা বিভাগের প্রভাষক কৃপাকণা তালুকদার বলেন, রায়বেঁশে বা লাঠিখেলা হাজার বছরের বাঙ্গালী ঐতিহ্যের এক অন্যতম নিদর্শন। যুদ্ধ নৃত্য হলেও আমাদের দেশীয় আচার উপাচার মিশ্রিত এই পরিবেশনাটি আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতির অংশ। যা পরিবেশিত হয়ে আসছে বিভিন্ন দেশীয় পার্বণে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা তাদের পাঠ্যক্রমে দেশজ নাট্যের নৃত্য অংশে এই রায়বেঁশে পরিবেশনাটি অধ্যয়ন করে আসছে। ফলে পহেলা বৈশাখ উদযাপন উপলক্ষে এই পরিবেশনাটি বিভাগের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহনে উপস্থাপিত হয়েছে।
পরিবেশনা দেখে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইমদাদুল হক বলেন, রায়বেঁশে নৃত্যের মতো এ ধরনের বাঙালির নিজস্ব সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যগুলো সংরক্ষণের দায়িত্ব আমাদের। শুধু পহেলা বৈশাখে নয়, এমন পরিবেশনা যাতে নিয়মিত নয়। তবে বাঙালি সংস্কৃতি রক্ষা পাবে। এবং এ ধরনের সৃজনশীল বিভাগ ও সৃজনশীলতার চর্চা প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ে হওয়া উচিৎ।
উল্লেখ্য, প্রাচীন কাল থেকে বাংলার প্রবাদ, প্রবচন, ধাঁ ধাঁ, মন্ত্র সহ বিভিন্ন লোক কাহিনীতে লাঠি খেলার উল্লেখ পাওয়া যায়। লাঠি ব্যবহার করে প্রদর্শিত তেমনই এক ধরনের যুদ্ধ নৃত্য হলো রায়বেঁশে। রায় বাঁশ বা বড় বাঁশ ব্যবহার করে এই পরিবেশনাটি উপস্থাপন করা হয়। নানাবিধ শব্দ, বোলের সুরে সুরে নাচটি পরিবেশিত হয়। নাচটির সঙ্গে যুক্ত হয় নানান রকম শারীরিক কসরত। বিভিন্ন প্রাণীর প্রতীকরূপ তৈরি করা হয় অঙ্গ ব্যবহারের মাধ্যমে। নানান রকম শারীরিক কসরতের মাধ্যমে সৃষ্ট বিন্যাসও এই নাচের অন্তর্ভুক্ত। এছাড়া মুখ দিয়ে আগুণ নিঃসৃত করার মতো রোমহর্ষক খেলাগুলো এই নাচের সময় পরিবেশিত হয়।
caller_get_posts
is deprecated. Use ignore_sticky_posts
instead. in /home/somoynewsbd/public_html/wp-includes/functions.php on line 5667caller_get_posts
is deprecated. Use ignore_sticky_posts
instead. in /home/somoynewsbd/public_html/wp-includes/functions.php on line 5667
Leave a Reply