নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
রাজধানীর চকবাজার, লালবাগ,
হাজারীবাগ, কামরাঙ্গীরচর, সূত্রাপুর
সাভার সহ পুরান ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় পলিথিনের ফ্যাক্টরী গড়ে উঠেছে।
বিজ্ঞানীদের মতে, শক্তির উৎপাদন
নাই, শক্তির ক্ষয় নাই,শুধু মাত্র শক্তি এক অবস্হা থেকে অন্য অবস্থায় রুপান্তিত করা যায়।একে শক্তির অবিনাশীতাবাদ সূত্র বলে।পলিথিনের ক্ষেত্রে কিছুটা ব্যাতিক্রম।পলিথিন ধ্বংশ হয় না তবে নতুন ভাবে আবার তৈরি করা যায়।পলিথিন ধ্বংস করার একমাত্র উপায় হলো পুড়িয়ে ফেলা।
পলিথিনের কাচামাল একসময় দেশের বাহিরে থেকে আমদানী করা হতো।
২০০২ সাল থেকে পলিথিনের কাচামাল সহ এলসি বন্ধ করা হলে ব্যবসায়ীরা
ওয়েষ্ঠিত পলিথিনের দিকে বেশি খেয়াল দেয়।ওয়েষ্টিজ পলিথিন থেকে বিশেষ প্রক্রিয়ায় দানা তৈরী করা হয়।দানাই হল পলিথিনের কাঁচামাল, দানা থেকেই আবার নতুন পলিথিন তৈরী হয়
সূত্র জানায়, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাফা) এর তথ্য অনুযায়ী প্রতিদিন ঢাকায় প্রায় ২ কোটি পলিথিন ব্যাগ জমা হচ্ছে। আর বিশ্বে প্রতি বছরে ৫
লাখ কোটি পলিথিন ব্যাগ ব্যবহার করা হচ্ছে। পলিথিনের বহুবিধ ব্যবহারের
কারনে মানুষের শরীরে নানাবিধ রোগ বাসা বাঁধছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, পলিথিন ও প্লাষ্টিকের নানাবিধ ব্যবহারের কারনে হরমোন বাধা গ্রস্হ হয়, ফলে দেখা দিতে পারে বন্ধতা, নষ্ট হতে পারে গর্ভপতি মায়ের ভ্রুন, বিকল হতে পারে লিভার ও কিডনি। গবেষকরা বলেছেন, প্লাস্টিক বা পলিথিন থেকে গরম পানি বা গরম খাবার ঢালার সাথে সাথে রাসায়নিক বিক্রিয়ায়
বিসফেলন-এ তৈরী হয় । বিসফেলন-এ থাইরয়েড হরমোনকে বাধা দেয়। বাধা প্রাপ্ত
হয় মস্তিষ্কের গঠনও গর্ভপতি নারীদের রক্ত থেকে বিসফেলন-এ যায়।ফলে নষ্ট হতে পারে ভ্রুন, দেখা দিতে পারে বন্ধ্যত্ব,শিশু হতে পারে বিকলাঙ্গ। তাছাড়া ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ১০ টি কারনের মধ্যে অন্যতম হলো প্লাস্টিকের ব্যবহার।
সরেজমিনে পলিখিনের প্রতিবেদন আনতে গেলে দেখা যায়, মূলত তিনটি পদ্ধতিতে ব্যবসায়ীরা পলিথিন ব্যবসা করে থাকে। কিছু ব্যবসায়ী পলিখিন কারখানার মালিক,কিছু ব্যবসায়ী আছে গোডাউনে মালিক, কিছু ব্যবসায়ী আছে ভাসমান, ভাসমান ব্যবসায়ীরা খুব কৌশলী হয় ।নাম প্রকাশে এক ভাসমান ব্যবসায়ী বলেন, আমরা ধরাছোঁয়ার বাইরে, আমাদের কোন ঠিকানা নেই, আমার নামে কিছু লিখলে মামলা করে দিব।রাজধানীর কামরাঙ্গীরচর, চকবাজার, সূত্রপুর, লালবাগ, হাজারীবাগ থানা
এলাকা ঘুরে দেখা যায় চকবাজার এলাকায় বাগানবাড়িতে কয়েকশত ফ্যাক্টরী পড়ে উঠেছে। পলিথিন কারখানার মালিকদের মধ্যে ‘জালালের নাম অন্যতম।কারন জালালের নিজের ফ্যাক্টরী নিজের ট্রান্সপোর্ট, নিজের গোডাউন সাথে যুক্ত হয়েছে সাভারে থানা রোডে নিজের বাড়িতে
গোডাউন।জালালের সাথে কথা বললে সময় নিউজ বিডিকে জানায়,আমার দুইটা ফ্যাক্টরি আছে, একটা সাভার বাড়িতে অন্যটা লালবাগ এলাকায়,আমার নিজস্ব ট্রন্সপোর্ট।এছাড়া আছেন সন্জিত, দাদন, আলাউদ্দিন, সোহান,মিন্টু, জসিম,শাকিল, বাচ্চু,আতিক,ছোট সুমন সহ আরো অনেকে।
কিছুদিন আগে র্যাবের অভিযানে চকবাজারের বাগান বাড়ি,কামরাঙ্গীরচর এবং সুত্রাপুরের কয়েকটি কারখানায় জরিমানা করা হয়। তারপরও অবৈধ পলিথিন ব্যবসায়ীরা বসে নেই, কারখানা
গুলোতে চলছে উৎপাদন।সরেজমিনে প্রতিবেদন_ আনতে গেলে দেখা য়ায় রাজধানী ঢাকার নবীনগর,বাইপাইল, আশুলিয়া,রপ্তানি ইপিজেড পলিথিনের এলাকায় চলছে রমরমা বানিজ্য। তবে এসব এলাকায় পলিথিনের কারখানা নেই।সিন্ডিকেটের মাধ্যমে পুরান ঢাকা থেকে পলিথিন নিয়ে আসে। এই এলাকায় প্রধান পলিথিন ব্যবসায়ী সেলিম। সেলিমের ম্যানেজার তার আপন শ্যালক সাদ্দাম। সাদ্দামের গোডাউন আশুলিয়ার বাইপাইলে। বছর খানেক আগে সেলিম ছিল বড় পলিথিন ব্যবসায়ী বর্তমান তার শ্যালক সাদ্দাম অত্র এলাকার বড় পলিথিনও ব্যবসায়ী।সাদ্দাম এখন ও এলাকায় পলিথিন ব্যবসার প্রধান নিয়ন্ত্রক।
পুরান ঢাকার লালবাগ, কামরাঙ্গীরচর, চকবাজার, সুত্রাপুর,হাজারীবাগ থানায় গড়ে উঠেছে কয়েকশত পলিথিন কারখানা। পলিথিন কারখানা গুলোর সন্ধানে গেলে বাগানবাড়ি ক্লাবঘাট আশরাফ আলী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে সাউন্ড সিডি রেকডিং এর বিপরীত পাশে বিল্ডিং এর তৃতীয় ও চতুর্থ তলায় কারখানা রয়েছে। কারখানার মালিকের নাম মোঃ জালাল। পলিথিন ব্যবসার জন্য যাপ্রয়োজন হয় কারখানা, ট্রন্সপোর্ট এবং গোডাউন সবই জালালের আছে।সনজিত এবং জালাল একই সাথে ব্যাবসা করেন।
ইসলামবাগ এরশাদ কলোনী মসজিদের সামনে ডাইনের গলিতে ২য় তালায়
রমিজের কারখানা।দেবিদাস ঘাট রিস্কা গ্যারেজের সামনে হাতের ডান পাশের বিল্ডিং এর ২য় তালায় অপুর কারখানা।অপু সাথে ফোনে যোগাযোগ করলে ফোন বিজি পাওয়া যায়।কেল্লার মোড় ঝোলা পট্টি মিয়া ভাইয়ের বাড়িতে সোহানের কারখানা, আলাউদ্দিনের কারখানা ঝোলা পট্টিতে। দাদনের কারখানা কামালবাগ লাকড়ি পট্টিতে।আরো কারখানা মালিক আছেন মিন্টু, শাকিল,জসিম ও আতিক।
পলিথিন ব্যবসাটি নিয়ন্ত্রিত হয় সিন্ডিকেটের মাধ্যমে। তথ্য সংগ্রহের জন্য পলিথিন ব্যবসায়ী সেজে পুরান ঢাকায় গেলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যবসায়ী বলেন, আপনারা যদি পলিথিন ব্যাবসা বা কারখানা দিতে চান তাহলে আমির হাজির কাছে যান উনি এই ব্যবসার সিন্ডিকেট উনার কাছে বললে সব ব্যবস্থা করে দিবে। আমির হাজীর কোন কারখানা নেই গোডাউন নেই তবে সব কিছু নিয়ন্ত্রণ করে।
পরিবেশ বিদদের দাবি পলিথিন উৎপাদন ও ব্যাবসা যেন দ্রুত বন্ধ হয়। তা না হলে অচিরেই আমাদেন পরিবেশ ধ্বংস হবে। সচেতন সমাজের দাবি পলিথিন বদলে আমরা যেন পাট পাটজাত দ্রব্য থেকে উৎপাদিত ব্যাগ ব্যবহার করতে পারি ।চলবে,,,,,