মঞ্জুর: প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ৬১টি জেলায় ইউনিয়ন ভিত্তিক ৪ হাজার ২০০ জন লাইভস্টক সার্ভিস প্রোভাইডারদের (এলএসপি) ন্যূনতম গ্রেডে বেতন ভাতা প্রদান ও রাজস্বকরণের দাবি জানিয়েছে এলএসপি কল্যাণ পরিষদ বাংলাদেশ। শুক্রবার ১৮ অক্টোবর জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা আকরাম খাঁ হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়। লিখিত বক্তব্যে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক এস এম জামান বলেন, প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্পের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বাংলাদেশের ৬১টি জেলার ৪ হাজার ২০০ জন (ইউনিয়ন ভিত্তিক) এলএসপিগণ দিন-রাত নিরলসভাবে কাজ করে আসছে। প্রকল্পের কর্মকর্তাগণের দূরদর্শী নেতৃত্ব, সময়োপযোগী পরিকল্পনা ও গবেষণার ফলশ্রুতিতে দেশের প্রাণিসম্পদ খাত প্রান্তিক খামারিদের কাছে হয়ে উঠেছে ব্যাপক আলোচিত ও সম্ভাবনাময়ী। এলডিডিপি প্রকল্পের আওতায় বিভিন্ন সময় অনুষ্ঠিতব্য প্রশিক্ষণ ৪ হাজার ২০০ জন এলএসপিকে রূপান্তরিত করেছে দক্ষ ও প্রশিক্ষিত মানবসম্পদে। সেই দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে আমরা কোভিড-১৯ চলাকালীন সময় প্রকল্প থেকে প্রদত্ত আর্থিক প্রণোদনা স্বচ্ছতার সঙ্গে সম্পূর্ণ করেছি। বর্তমানে সারাদেশে আমরা ৬ হাজার ৫০০ টি (আনুমানিক) প্রডিউসার গ্রুপ তৈরি করেছি যা পিজি নামে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেছে। তিনি বলেন, আমরা নিয়মিত খামারিদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের মাধ্যমে প্রাকৃতিক দুর্যোগ, বন্যা শীতকালীন, গ্রীষ্মকালীন সময়ে প্রাণীর চিকিৎসা ও যত্ন বিষয়ে সুপরামর্শ প্রদান করে আসছি। এ ছাড়া প্রচলিত খামার ব্যবস্থাপনার ধারণাকে বদলে দিয়ে প্রতিনিয়ত প্রান্তিক খামারিদের আধুনিক, মানসম্মত ও প্রযুক্তি সম্বলিত খামার গঠনে নানা প্রকার পরামর্শ প্রদানের মাধ্যমে তাদের উৎসাহিত করে যাচ্ছি। যার ফলে এলডিডিপি প্রকল্প ও প্রাণিসম্পদের কার্যক্রম প্রান্তিক খামারিদের মধ্যে গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠেছে। কিন্তু দুঃখজনক বিষয় এই যে, চিকিৎসালয় হিসেবে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও কমিউনিটি ক্লিনিক আছে, কৃষকদের জন্য আছে ইউনিয়ন পর্যায়ে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা, কিন্তু স্থায়ীভাবে খামারিদের জন্য ইউনিয়ন ভিত্তিক প্রাণিসম্পদ সেবা বা পরামর্শ কেন্দ্র না থাকায় প্রান্তিক খামারিদের সুদূর উপজেলা ভেটেরিনারি হাসপাতালে জরুরি অবস্থায় অসুস্থ প্রাণীকে চিকিৎসা সেবার জন্য নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়ে ওঠে না। ফলে খামারিরা প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এতে করে দেশ ও খামারি আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তাই দুধ, ডিম ও মাংসের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের লক্ষ্যে ইউনিয়ন ভিত্তিক এলএসপিদের স্থায়ী নিয়োগের মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও খামারিদের স্বার্থে চলমান কার্যক্রম অব্যাহত রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রাণিসম্পদকে অধিকতর যুগোপযোগী করে তোলা হলে দেশের অর্থনীতিতে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে বলে আমরা মনে করছি। এমতাবস্থায়, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে এলডিডিপি প্রকল্পের আওতায় ৪ হাজার ২০০ জন দক্ষ ও প্রশিক্ষিত জনবলের অসহায়ত্বের কথা বিবেচনা করে এলএসপিদের ইউনিয়ন ভিত্তিক প্রাণিসম্পদ সেবা কেন্দ্র চালু করে সরাসরি নিয়োগের মাধ্যমে ন্যূনতম গ্রেডে বেতন ভাতা প্রদান ও চাকরি রাজস্বকরণ করার জোর দাবি জানান। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, সভাপতি মোঃ শাহাদাত হোসেন, সিনিয়র সহ-সভাপতি জয়নাল আবেদীন, সহ-সভাপতি মোঃ সাইফুল ইসলাম, সহ-সভাপতি আব্দুল মতিন, সহ-সভাপতি মোখলেসুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আয়েশা আক্তার প্রমুখ।
সমাজ ও রাষ্ট্রে ‘ইসলাম’ প্রতিষ্ঠায় মহাসত্যের ভিত্তিতে জাতীয় ঐক্য গঠনে ইসলামী সমাজের ৩ দিনব্যাপী শান্তিপূর্ণ গণজাগরণ যাত্রা সু-সম্পন্ন
মঞ্জুর: ইসলামী সমাজের উদ্যোগে- ২৭, ২৮ ও ২৯ অক্টোবর (রবি, সোম ও মঙ্গলবার), গাজীপুর মুক্তমঞ্চ থেকে জাতীয় প্রেসক্লাব পর্যন্ত ৩ দিনব্যাপী শান্তিপূর্ণ গণজাগরণ যাত্রা কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। গণজাগরণ যাত্রা চলাকালীন বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্পটে সংক্ষিপ্ত পথসভায় ইসলামী সমাজের সম্মানিত আমীর এবং বিভাগীয় দায়িত্বশীলগণ বক্তব্য রাখেন। বক্তারা বলেন, বিশ্বের প্রতিটি দেশে মানব রচিত ব্যবস্থার মাধ্যমে সমাজ ও রাষ্ট্র গঠন এবং পরিচালনায় সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর পরিবর্তে মানুষকে সার্বভৌমত্বের মালিক, আইনদাতা-বিধানদাতা ও শাসনকর্তা গ্রহণ করে মানুষ আল্লাহর সাথে কুফর এবং শিরকে লিপ্ত হয়ে আছে। তিনি বলেন, গণতন্ত্রসহ মানব রচিত সকল মতবাদ দুর্নীতি, বৈষম্য ও জাহান্নামের পথ। বাংলাদেশের মানুষ গণতন্ত্র গ্রহণ করে সমাজ ও রাষ্ট্র গঠন এবং পরিচালনায় সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর সার্বভৌমত্বআইন-বিধান ও কর্তৃত্ব অমান্য করে তাঁর সাথে কুফর করছে এবং নিজেদেরকে সার্বভৌমত্বের মালিক, সংসদ সদস্যদেরকে আইনদাতা ও সরকার তথা মন্ত্রীদেরকে শাসনকর্তা মেনে মহান রব্ব আল্লাহর সাথে শিরক করছে। আল্লাহর সাথে কুফর এবং শিরক করা চরম অপরাধ ও দুর্নীতি, যার পরিণতি দুনিয়ার জীবনে বিভিন্ন রকম আযাব-গজবের শিকার হয়ে দুর্ভোগ ও অশান্তি এবং আখিরাতের জীবনে নিশ্চিত ঠিকানা জাহান্নাম। মানব রচিত সকল মতবাদ চরম দুর্নীতি এবং কুফরী ও শিরকী ব্যবস্থা-জাহান্নামের পথ। মানুষের মাঝে বৈষম্যের মূল কারণ হলো দুর্নীতি। দুর্নীতি গ্রহণ করার কারণেই মানুষের ন্যায্য অধিকার আদায় এবং সংরক্ষণ হচ্ছে না।সুতরাং গণতন্ত্রসহ কোন মানব রচিত ব্যবস্থার মাধ্যমে দুর্নীতি ও বৈষম্য মুক্ত কল্যাণকর সমাজ এবং রাষ্ট্র গঠন সম্ভব নয়। গতকাল ২৯ অক্টোবর ২০২৪ইং, মঙ্গলবার, বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে শান্তিপূর্ণ গণজাগরণ যাত্রা শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে ইসলামী সমাজের আমীর বলেন, দুর্নীতি ও বৈষম্য মুক্ত কল্যাণকর সমাজ ও রাষ্ট্র গঠন করতে হলে প্রয়োজন নীতি ও আদর্শ। গণতন্ত্রসহ মানব রচিত কোন ব্যবস্থাই নীতি ও আদর্শ নয়; সার্বভৌম ক্ষমতার একমাত্র মালিক সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ প্রদত্ত ব্যবস্থা ‘ইসলাম’ই একমাত্র নীতি ও আদর্শ। তিনি বলেন, সকল ধর্মের লোকদের জন্য যার যার ধর্ম পালনের সুযোগ রেখে সমাজ ও রাষ্ট্রে আল্লাহর রাসূল হযরতমুহাম্মাদ (সাঃ) এর প্রদর্শিত পদ্ধতিতে ‘ইসলাম’ প্রতিষ্ঠা করতে হবে। ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হলেই “দুর্নীতি ও বৈষম্য মুক্ত কল্যাণকর সমাজ ও রাষ্ট্র গঠন হবে, সকলের সকল অধিকার আদায় এবং সংরক্ষণ হবে। এ লক্ষ্যে ‘ইসলামী সমাজ’ গণতন্ত্রসহ সকল প্রকার মানব রচিত ব্যবস্থার বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থান গ্রহণ করে আল্লাহর রাসূল হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) এর প্রদর্শিত পদ্ধতিতে সমাজ ও রাষ্ট্রে ‘ইসলাম’ প্রতিষ্ঠার আন্তরিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সকল মানুষের সার্বিক কল্যাণে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও অন্যান্য উপদেষ্টাগণ এবং দেশবাসী ছাত্র-জনতা সকলকে তিনি গণতন্ত্র ত্যাগ করে ‘ইসলাম’ প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টায় শামিল হওয়ার আন্তরিক আহ্বান জানান। সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন ইসলামী সমাজের কেন্দ্রীয় ও বিভাগীয় দায়িত্বশীল- মুহাম্মাদ ইউসুফ আলী মোল্লা, মুহাম্মাদ ইয়াছিন, সোলায়মান কবীর, আমীর হোসাইন, মোঃ নুরুদ্দিন, মুহাম্মাদ আলী জিন্নাহ, আজমুল হক আসাদুজ্জামান বুলবুল, আৰু বকর সিদ্দিক, সেলিম মোল্লা, সাইফুল ইসলাম, হাফিজুর রহমান এবং সকল জেলা, মহানগর, থানা পর্যায়ের দায়িত্বশীলসহ নেতা ও কর্মীগন ।