মঞ্জুর:দেশ সংস্কারের মূল লক্ষ্য নিয়ে গতকাল ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ঢাকার জাতীয় প্রেস ক্লাবের আব্দুস সালাম হলে একটি জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বাংলাদেশ সংস্কারবাদী পার্টি (বিআরপি) তাদের আত্মপ্রকাশ করেছে। দলটি দেশের রাজনৈতিক, সামাজিক এবং অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করে, যেখানে জনগণের চাহিদা ও ভবিষ্যৎ উন্নয়নের জন্য নতুন দৃষ্টিভঙ্গি ও কার্যকর নেতৃত্বের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে! বাংলাদেশ সংস্কারবাদী পার্টি একটি সংস্কারমুখী, গণতান্ত্রিক ও প্রগতিশীল রাজনৈতিক দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে, যা দেশের মানুষের জন্য একটি নতুন আশার প্রদীপ হতে চায়। দলটি দেশের সমাজে ন্যায়বিচার, সমতা, উন্নয়ন এবং সমৃদ্ধি প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে কাজ করবে। বাংলাদেশ সংস্কারবাদী পার্টির মূল লক্ষ্য হলো: একটি সুষ্ঠু ও গণতান্ত্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করা, সামাজিক ও অর্থনৈতিক বৈষম্য দূর করা, দুর্নীতি নির্মূল করা, প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনকে উৎসাহিত করে দেশের সার্বিক উন্নয়ন সাধন করা। দলের প্রতিষ্ঠালগ্নে, ওয়েবসাইট (www.brpbd.org) এ প্রকাশিত প্রাথমিক সংবিধানে দলটির কাঠামো, নিয়ম-নীতি, সদস্যপদ, নেতৃত্ব নির্বাচন প্রক্রিয়া এবং উদ্দেশ্য স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।দলটি একটি সুশাসিত, সচ্ছল ও উদ্ভাবনী রাষ্ট্র গঠনের লক্ষ্যে
কাজ করবে, যেখানে নাগরিকদের অধিকার সুরক্ষিত থাকবে এবং সমান সুযোগ নিশ্চিত করা হবে। দলের প্রতিষ্ঠাতা ও আহবায়ক, সোহেল রানা ভার্চুয়ারী তার বক্তব্যে বলেন, “সংস্কারেই পরিবর্তন, পরিবর্তনেই বাংলাদেশ” – এই মূলমন্ত্রে উদ্বুদ্ধ হয়ে দলটি দেশের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সামাজিক বৈষম্য দূর করার লক্ষ্যে কাজ করবে। তিনি বলেন, “ভবিষ্যতের বাংলাদেশে সুশাসন, সমতা এবং অগ্রগতি নিশ্চিত করতে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া সম্ভব।’ আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ডক্টর কর্নেল অবঃ নাজমুল আহসান কলিম উল্লাহ, লোক প্রশাসন বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক মঞ্জুরুল আলম, সাবেক অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ডাঃ এ কে এম কামরুল ইসলাম, সদস্য, বিএমএ, অধ্যাপক ডাঃ শেখ আসিফ এস মিজান, ভাইস চ্যান্সেলর, দারুস সালাম বিশ্ববিদ্যালয়, মোগাদিশু, সোমালিয়া, তানভীর আবির পিএইচডি, ডিরেক্টর, ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট সেন্টার(সিডিসি), ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি প্রমুখ । অনুষ্ঠানে দলের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ দলের লক্ষ্য, বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করেন। তারা সকল নাগরিককে সংস্কারের প্রতি সচেতন করার আহ্বান জানান এবং দলটির উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে একযোগে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দেন। তারা বলেন, “সংস্কার হবে ব্যক্তি, সামাজিক এবং রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে। প্রতিটি নাগরিকের দায়িত্ব, নিজ নিজ অবস্থান থেকে সংস্কার কার্যক্রম শুরু করা; তবেই আমরা কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ গড়তে পারব। সংক্ষেপে দলের উল্লেখযোগ্য কিছু সংস্কারমূলক পরিকল্পনা বা ভবিষ্যৎ কার্যক্রমের রূপরেখা সম্পর্কে যা জানা যায়, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে – শিক্ষা খাতে সংস্কার: শিক্ষাব্যবস্থা আধুনিকীকরণ এবং সকল জনগণের জন্য মানসম্মত শিক্ষার সুযোগ নিশ্চিত করা।বিশেষভাবে নারী শিক্ষাকে প্রাধান্য দেওয়া হবে। স্বাস্থ্যসেবা সংস্কার: সকল নাগরিকের জন্য সাশ্রয়ী ও উন্নত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা।বিশেষভাবে গ্রামীণ ও পিছিয়ে পড়া অঞ্চলগুলোর স্বাস্থ্যব্যবস্থার উন্নয়ন করা হবে।
অর্থনীতি ও কর্মসংস্থান: যুব সমাজের জন্য দক্ষতা উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি, উদ্যোক্তা উন্নয়ন এবং বৈশ্বিক অর্থনীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ উদ্যোগ গ্ৰহণ ৷ সমাজের বিভিন্ন শ্রেণির জন্য বিশেষ কার্যক্রম: বাংলাদেশ সংস্কারবাদী পার্টি, সমাজের প্রতিটি স্তরের জন্য বিশেষ কার্যক্রম গ্রহণ করবে। বিশেষভাবে দরিদ্র, সুবিধাবঞ্চিত, নারী এবং আদিবাসী জনগণের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা নেটওয়ার্ক উন্নত করা হবে। জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী, এই কার্যক্রমে নারী ও শিশু অধিকার সংরক্ষণ এবং আঞ্চলিক উন্নয়নেও গুরুত্ব দেয়া হবে। ভিন্ন দলের মধ্যে পার্থক্য এবং অনন্যতা : বাংলাদেশ সংস্কারবাদী পার্টি অন্য রাজনৈতিক দলগুলোর থেকে আলাদা এবং অনন্য তার কর্মপদ্ধতিতে। এই দলটি শুধুমাত্র জাতীয় রাজনীতি নয়, বরং ব্যক্তিগত, সামাজিক এবং রাষ্ট্রীয় পর্যায়েও সংস্কার কার্যক্রম চালাবে। বর্তমান রাজনীতির অচল অবস্থার মধ্যে সুষম, কার্যকর ও সুশাসিত রাষ্ট্র গঠন এবং জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতা এ দলের মূল অঙ্গীকার। দলটি শুধুমাত্র প্রতিশ্রুতি নয়, কাজের মাধ্যমে এসব লক্ষ্য অর্জন করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে বিশেষ করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা এবং সামাজিক ন্যায়বিচারের লড়াইয়ে বাংলাদেশের জনগণের সংগ্রামকে স্মরণ রেখে বিআরপি তার কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। দলটি বিশ্বাস করে, যে জাতি তার ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেবে, সেই জাতিই উন্নতির পথে অগ্রসর হতে পারে। বিআরপি এই ঐতিহাসিক চেতনাকে বর্তমান রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক সংস্কারের মঞ্চ হিসেবে ব্যবহার করবে এবং জনগণের জন্য একটি নতুন,
সমৃদ্ধ ভবিষ্যত গড়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। আত্ম প্রকাশ অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, যুগ্ম আহবায়ক এস.এম. আলতাফ হোসাইন, মেহেদী হাসান, আব্দুস সালাম শিকদার,সৈয়দ মোঃ মাসুদ রানা, অধ্যাপক সজল চন্দ্র দাস, সদস্য সচিব মোঃ তৌহিদুল ইসলাম, যুগ্ম সদস্য সচিব মোঃ মোবারক হোসেন প্রমুখ।