মঞ্জুর: ন্যাশনাল ডক্টরস ফোরাম (এনডিএফ) ১১ই সেপ্টেম্বর ২০২৪, জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, সভাপতি, ন্যাশনাল ডক্টরস ফোরাম, অধ্যাপক ডাঃ মোঃ নজরুল ইসলাম, সহ-সভাপতি, ডাঃ আতিউর রহমান, সাধারণ সম্পাদক, ন্যাশনাল ডক্টরস ফোরাম, অধ্যাপক ডাঃ মাহমুদ হোসেন, ডাঃ এ.কে.এম জিয়াউল হক, ডাঃ জুয়েল প্রমুখ। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, অধ্যাপক ডাঃ মোঃ নজরুল ইসলাম।তিনি বলেন, ন্যাশনাল ডক্টরস ফোরাম (এনডিএফ) ছাত্র জনতার আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহন করেছে। এনডিএফ তার নিয়মিত কার্যক্রমের অংশ হিসেবে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ গত ২১.০৮.২০২৪, বুধবার অন্তবর্তীকালীন সরকারের মাননীয় স্বাস্থ্য উপদেষ্টার সাথে সাক্ষাৎ করেন এবং এনডিএফ এর পরিচিতি এবং সামগ্রিক কর্মকাণ্ড তুলে ধরেন। বর্তমানে এনডিএফ চিকিৎসক এবং রোগীদের কল্যানে তার কার্যক্রম পরিচালনা করছে। দাবী সমূহ- ছাত্র জনতার হাতে সফল বিপ্লবের ফলে গঠিত অন্তবর্তীকালীন সরকার যে গতিতে কাজ করছেন, স্বাস্থ্য খাত সেভাবে জনগনের প্রত্যাশা পুরন করতে পারছে না। স্বাস্থ্য খাতে বর্তমান স্থবিরতা এবং অস্থিরতার পেছনে ফ্যাসিবাদের দোসরদের ষড়যন্ত্র সক্রিয় আছে মর্মে চিকিৎসক সমাজের কাছে স্পষ্ট। তাই ফ্যাসিবাদের দোসর, যাদের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, মেডিকেল কলেজ, মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ও অন্যান্য স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ পদে নিযোগ প্রদান করা হয়েছে, তাদের নিযোগ আদেশ বাতিল করতে হবে। স্বাস্থ্য খাতে গতিশীলতা নিয়ে আসতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরসহ, সকল প্রতিষ্ঠানে কর্মরত স্বৈরাচারের দোসরদের অতিদ্রুত সরিযে সৎ, দক্ষ, যোগ্য এবং বৈষম্যের শিকার চিকিৎসক কর্মকর্তাদের পদায়ন করে স্বাস্থ্য প্রশাসন ঢেলে সাজাতে হবে। ছাত্র জনতার আন্দোলনে আহত ছাত্র জনতাকে যারা চিকিৎসা দিতে অস্বীকার করেছে, তাদের তালিকা প্রণয়ন করতে হবে একই সাথে তাদের বিএমডিসি এর রেজিস্ট্রেশন বাতিল করে আইনের আওতায় আনতে হবে। শান্তি সমাবেশে যোগদানকারী ও ফ্যাসিবাদের দোসর সকল চিকিৎসক ও কর্মকর্তা/ কর্মচারীর তালিকা প্রনয়ণ করে তাদেরকে পদ থেকে অব্যাহতি দিতে হবে এবং তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনী প্রক্রিয়া গ্রহণ করে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। ছাত্র জনতার আন্দোলনে অংশগ্রহনকারী, অন্যায়ের প্রতিবাদকারী যেসব চিকিৎসকদের হয়রানিমূলক বদলী করা হয়েছে সেই বদলী আদেশ অবিলম্বে বাতিল করতে হবে। অতি দ্রুত বৈষম্যের শিকার সকল চিকিৎসক ও কর্মচারীগণকে ভূতাপেক্ষভাবে পদোন্নতি দিয়ে বৈষম্য দূর করতে হবে। বর্তমানে পদোন্নতিযোগ্য প্রত্যেককেই দ্রুততার সাথে পদোন্নতির ব্যবস্থা করতে হবে। এজন্য সততা, যোগ্যতা, দক্ষতা, ও মেধার ভিত্তিতে স্বাস্থ্য ক্যাডারদের নিয়মিত প্রমোশন নিশ্চিত করা। বিসিএস প্রশাসন, পুলিশ ও পররাষ্ট্র ক্যাডারের মতো পোস্ট খালি না থাকলেও ইনসিটু ও সুপার নিউমারী প্রমোশন চালু করতে হবে । এজন্যে প্রতিবছর ডিপিসি বা সুপিরিয়র সিলেকশন বোর্ড আয়োজন করতে হবে। এ লক্ষ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে নোটিশ এবং প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে। বিগত দীর্ঘ ১৫ বছর সময়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর, মেডিকেল ইউনিভার্সিটি, মেডিকেল কলেজ, হাসপাতালসহ স্বাস্থ্য খাতের সকল বিভাগ দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে। বিগত সময়ে যত দুর্নীতি হয়েছে তার যথাযথ তদন্তের জন্যে দুর্নীতি দমন কমিশনকে দায়িত্ব প্রদান করে স্বাস্থ্য খাতের দূর্নীতির শ্বেতপত্র প্রকাশ ও দায়ী ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ও চিকিৎসা সেবার গুণগতমান উন্নয়ন এবং স্বাস্থ্য ব্যবস্থার কাঠামো শক্তিশালীকরণের জন্য গঠিত বিশেষজ্ঞ প্যানেল কমিটিতে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশকারী চিকিৎসক সমাজ, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, ছাত্র সমন্বয়কদের প্রতিনিধিত্ব রেখে কমিটি পুনঃগঠনের জোর দাবী জানাচ্ছি। আন্ত ক্যাডার বৈষম্য দূর করতে স্বাস্থ্য খাতে চিকিৎসকদের চাকুরীর বয়স সীমা অনুযায়ী নিয়মিত পদোন্নতি দিতে হবে। ভুল এবং মানহীন চিকিৎসায় জনগনের শারীরিক, মানসিক এবং আর্থিক ক্ষতি বন্ধ করতে নিবন্ধনবিহীন মানহীন হাসপাতালসমূহের তালিকা করতে হবে। একই সাথে এই সকল প্রতিষ্ঠানসমূহ সম্পূর্ন বন্ধ করতে হবে এবং দায়ী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। ডাক্তার শব্দের অপব্যবহার বন্ধ করার কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে সারা দেশে ভূয়া চিকিৎসকদের দৌরাত্ম বন্ধ করতে হবে। ভূয়া চিকিৎসকদের তালিকা প্রনয়ণ করে আইনের আওতায় আনতে হবে। ফার্মেসীগুলোতে সরকার নির্ধারিত ওটিসি ঔষধ ব্যতীত অন্যান্য ঔষধ বিক্রিতে চিকিৎসকদের প্রেসক্রিপশন অনুসরন করার কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের গতিশীলতা বাড়াতে ছাত্র সমন্বয়ক এবং বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী চিকিৎসকদের মধ্য থেকে সহকারী স্বাস্থ্য উপদেষ্টা হিসেবে ন্যূনতম দুই জনকে নিয়োগ করতে হবে। স্বাস্থ্য সেবা ও সুরক্ষা আইন ২০২৩ কে রোগী এবং চিকিৎসক বান্ধব করতে হবে। বিশেষ করে কর্মস্থলে চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। কর্মস্থলে চিকিৎসকদের শারীরিকভাবে হরয়ানীকারিদের শাস্তি তথা জেল জরিমানার ব্যবস্থা করতে হবে। রোগীদের সঠিক চিকিৎসা নিশ্চিত রাখতে হাসপাতাল গুলোতে বিশেষ নির্দেশনা দেয়া ও প্রয়োজনীয় লোকবল ও সরঞ্জাম সরবরাহ করতে হবে এবং সকল শূন্যপদ পূরণ করতে হবে। স্বাস্থ্য ব্যবস্থার দুর্নীতি দমন করতে ইউএইচএফপিও, সিভিল সার্জন, ডিভিশনাল ডিরেক্টর এর মত প্রশাসনিক পোষ্টের কর্মকর্তাদের (স্বাস্থ্য বিভাগ সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য) ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার/ বিচারিক ক্ষমতা দিতে হবে। (ইতোমধ্যে মহামারীকালীন সময়ে এটি প্রয়োগ করার একটা আইন আছে)। নারী স্বাস্থ্যকর্মীদের সঠিক ভাবে কাজে সহায়তাকল্পে প্রতিটি হাসপাতালে (সরকারি/বেসরকারি) ডে কেয়ার সেন্টার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। বাংলাদেশের চিকিৎসকদের মান আন্তর্জাতিক পর্যায়ে উন্নীত করার লক্ষ্যে সরকারী ব্যবস্থাপনায় আরো অধিকহারে চিকিৎসকদের বিদেশে প্রশিক্ষনে পাঠানোর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। বাংলাদেশের চিকিৎসা শিক্ষাকে আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহনযোগ্য মানে উন্নীত করার ব্যবস্থা করতে হবে বিশেষ করে বাংলাদেশের চিকিৎসা পেশা সংশ্লিষ্ট ডিগ্রীসমূহ (এমবিবিএস, ডিপ্লোমা, এমডি, এমএস, এফসিপিএস ইত্যাদি) আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অনুমোদনের লক্ষ্যে ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে। বিএসএমএমইউ সহ সকল মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে সরকারী চিকিৎসকদের অধ্যয়ন প্রক্রিয়া সহজ করা। তাদের সকল অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। ছাত্র জনতার বিপ্লবের ফসল ঘরে তুলতে তথা দেশের আপামর জনগনের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে স্বাস্থ্যখাতে কার্যকর পরিকল্পনা গ্রহণ, পর্যাপ্ত বাজেট বরাদ্দ এবং তা বাস্তবায়ন করতে হবে। এই লক্ষ্যে শক্তিশালী স্বাস্থ্য কমিশন গঠন করতে হবে।
ইউনিট সভাপতি নজরুল ইসলাম বিশাল মিছিল নিয়ে কর্মীসম্মেলনে যোগদেন
মোঃসাজ্জাদ হোসেন মোস্তফাঃ আজ সকাল ৯ ঘটিকায় তেজগাঁও রেলওয়ে খেলাঘর সমাজ কল্যান সংঘের মাঠে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী তেজগাঁও থানার আয়োজনে কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ