মঞ্জুর : বিসিএসে বয়সসীমা বাড়ানোর জন্য এক সপ্তাহ সময় বেঁধে দিয়েছেন চিকিৎসকরা। এর মধ্যে দাবি বাস্তবায়িত না হলে তারা রাজপথে নামতে বাধ্য হবেন বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন। সোমবার (৬ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত ইউনাইটেড মেডিকেল অর্গানাইজেশনস অব বাংলাদেশের (ইউমব) সংবাদ সম্মেলন এ কথা বলেন তারা। চিকিৎসকরা বলেন, অক্টোবর-নভেম্বরে আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে সাধারণ বিসিএসের বয়সসীমা দুই বছর বাড়ানো হয়। চিকিৎসকদের গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করতে অন্যদের তুলনায় সময় বেশি লাগে। সুতরাং তাদের বয়সসীমা ৩৪ করার দাবিটি অত্যন্ত যৌক্তিক। তারা বলেন, চিকিৎসক মহল সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য ইতিমধ্যে চিকিৎসক সমাবেশ করা, জাতীয় নাগরিক কমিটির সাথে যোগাযোগ, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সাথে নিয়মিত কথা বলা, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিবদের সঙ্গে দেখা করাসহ নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে বহুবার যোগাযোগ করেছে। ‘স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে শুরু করে নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের সকল ব্যক্তিবর্গ চিকিৎসকদের বয়সসীমা বৃদ্ধির ব্যাপারে ইতিবাচক হওয়া সত্ত্বেও এই সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করতে কালক্ষেপণ করা হচ্ছে’—মন্তব্য করেন তারা। ইউমব নেতৃবৃন্দ বলেন, যেসব চিকিৎসকের বয়স প্রায় শেষের দিকে, বয়স ৩৪ করা না হলে তারা বঞ্চনার শিকার হবেন। দাবির আলোকে সবার বয়স ৩২ করা হলেও চিকিৎসকদের বেলায় তা বাড়ানো হয়নি বলে উল্লেখ করেন তারা। সংবাদ সম্মেলনে চিকিৎসকরা আরও বলেন, বারবার বলার পরও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ চিকিৎসকদের বয়স বাড়িয়ে নতুন প্রজ্ঞাপন জারি করছে না। এ ব্যাপারে সরকারের মানসিকতাও বোঝা যাচ্ছে না। তারা বিষয়টি পরিষ্কার করছে না।<span;>চিকিৎসকরা বলেন, ‘গত ১৭ ডিসেম্বর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একটি নোটিশ অনুযায়ী বিসিএসে চিকিৎসকদের বয়স বাড়ানোর কথা ছিল। কিন্তু আজ পর্যন্ত বয়স বাড়ানোর বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের তরফ থেকে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। ইতিমধ্যে ৪৭তম বিসিএস পরীক্ষায় গত ২৯ ডিসেম্বর থেকে আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।’ তারা বলেন, ‘আজকের সংবাদ সম্মেলনের পর যেন আমাদের দাবিটা মেনে নেওয়া হয়। এক সপ্তাহের মধ্যে সমাধান না হলে আবারও স্বাস্থ্যখাতে অস্থিরতা তৈরি হবে, যা কাম্য নয়।’ দাবি নিয়ে রাস্তায় নামতে চান না জানিয়ে রোগীদের সেবা নির্বিঘ্ন রাখতে কর্তৃপক্ষকে এ ব্যাপারে মনোযোগী হওয়ার আহ্বান জানান তারা। চিকিৎসকরা বলেন, তা না হলে চিকিৎসকরা আবারও আন্দোলনে নামবেন, আর তখন বলা হবে সরকারবিরোধী আন্দোলন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ইউমবের মুখপাত্র ডা. মোবারক হোসাইন বলেন, স্বাস্থ্যসেবা মানুষের মৌলিক ও সাংবিধানিক অধিকার। এই সেবা নিশ্চিতের জন্য রাষ্ট্র জনগণের নিকট দায়বদ্ধ। এই দায়বদ্ধতাকে কাঁধে নিয়ে দেশের মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতের লক্ষ্যে এদেশের চিকিৎসক সমাজ অতন্দ্র প্রহরীর ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। কিন্তু এই গুরুদায়িত্ব পালনের পরিক্রমায় চিকিৎসক সমাজ নানা সময় নানা অব্যবস্থাপনার শিকার হচ্ছেন, বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। একইভাবে তারা বিসিএস পরীক্ষায় বয়সসীমার ক্ষেত্রে বৈষম্যের শিকার হয়েছেন। ইউমবের মুখপাত্র বলেন, গত বছরের ২৮ নভেম্বর প্রকাশিত ৪৭তম বিসিএস পরীক্ষায় আবেদনের প্রজ্ঞাপনে আবেদনকারীর বয়সসীমা ২১ থেকে ৩২ বছর উল্লেখ করা হয়, যা সকল আবেদনকারীর ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। অন্যান্য বিসিএস আবেদনকারীর স্নাতক শেষ করতে যেখানে ন্যূনতম ৪ বছর প্রয়োজন হয়, সেখানে চিকিৎসকদের এমবিবিএস/বিডিএস স্নাতক ও ইন্টার্নশিপ শেষ করতে নূন্যতম ৭৮ মাস বা সাড়ে ছয় বছর লাগে। তাই পূর্ববর্তী সকল সাধারণ বিসিএস পরীক্ষায় যেখানে আবেদনকারীদের বয়সসীমা ৩০ বছর ছিল, সেখানে চিকিৎসকদের বয়সসীমা ৩২ <span;>বছর ছিল। সর্বশেষ প্রকাশিত প্রজ্ঞাপনে সবার ক্ষেত্রে বয়সসীমা দুই বৃদ্ধি করে ৩২ করা হলেও চিকিৎসকদের বয়স বৃদ্ধি হয়নি। ফলে তারা এই ক্ষেত্রে বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। তিনি আরও বলেন, ‘জুলাই ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে যে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয়েছে এই রকম একটি যৌক্তিক বিষয় সমাধান না করা এই রাষ্ট্রে বিপ্লবের পরিপন্থী। আমরা আশা করি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আমাদের কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য করবেন না।’ এমন প্রেক্ষাপটে বিসিএস পরীক্ষায় চিকিৎসকদের বয়সসীমা পূর্বের ন্যায় দুই বছর বৃদ্ধি পূর্বক ৩৪ বছর করে অবিলম্বে প্রজ্ঞাপন জারি করতে সরকারের নিকট আবেদন জানান ডা. মোবারক হোসাইন। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ডাঃ সারোয়ার জানাহান তুহিন, ডাঃ গোলাম ছামদানী, ডাঃ হেদায়েতুল আকাশ প্রমুখ।

নড়াইলে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে হত্যা, স্বল্প সময়ের মধ্যে আসামি গ্রেফতার
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ নড়াইলের লোহাগড়া থানাধীন লাহুড়িয়া পশ্চিমপাড়া গ্রামে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আসামীদের সাথে মামলার ভিকটিম মৃত আকবার হোসেন শেখের পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের দীঘদিন ধরে