নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
‘জনগণের চাহিদা পূরণের মাধ্যমে অনেকের উপকার হতে পারে এরকম প্রকল্প গ্রহণ করবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। গণঅভ্যুত্থানের যে আকাঙ্ক্ষা সেটাই আমাদের রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি।’ বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ) এর আয়োজনে হোটেল প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও-এ ‘সংস্কার ও টেকসই উন্নয়নের সমন্বয়ে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ’- শীর্ষক সেমিনারের প্রধান অতিথির বক্তৃতায় বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান এ কথা বলেন।
উপদেশটা বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সাথে অন্য সরকারের পার্থক্য হল- অন্য সরকারকে ক্ষমতায় যেতে হয় কিন্তু অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করেছে। মৌলিক পার্থক্য এই সরকার কায়েমি স্বার্থের ওপর দায়বদ্ধ নয়। এই সরকারের দায়বদ্ধতা জুলাই বিপ্লবের শহীদ ও আহতদের প্রতি। তাই সকল সংস্কার ও কাজ তাদের কথা মাথায় রেখে করছেন বলে উপদেষ্টা জানান।
মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, জনগণের টাকা জনগণের স্বার্থে ব্যবহারের কথা মাথায় রাখতে হবে। সরকার একটি আমানত, ব্যক্তি স্বার্থ, বন্ধু-বান্ধব ও আত্মীয়তার স্বার্থের বাইরে গিয়ে এই আমানতকে রক্ষা করতে হবে।
সংস্কার সম্পর্কে তিনি বলেন, সংস্কার প্রধানত দুই প্রকার। প্রথম হলো- নীতির সংস্কার। পূর্বের সরকারের দুর্নীতির কাঠামো সম্পূর্ণরূপে ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। ২০১০ সালের আইন স্থগিত এবং ৩৪ক ধারা বাতিল করে এখন থেকে গণশুনানির মাধ্যমে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দাম নির্ধারণ করা হবে। অপরদিকে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের আওতায় মেট্রোরেলের নীতিমালার শর্ত- এমডি হতে হবে সরকারের প্রাক্তন সচিব। এই শর্ত বাদ দেওয়া হয়েছে। পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি লিমিটেডের এমডি পদে বুয়েটের অধ্যাপককে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
উপদেষ্টা আরো বলেন, প্রকল্পের মেয়াদ ও ব্যয় কোনটাই বাড়ানো হবে না। টেন্ডারের ক্ষেত্রে প্রকৃত প্রতিযোগিতা কিভাবে সৃষ্টি করা যায় সেই লক্ষ্যে কাজ করছে সরকার। যতটা সম্ভব দুর্নীতি কমিয়ে জন আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে হবে। এক্ষেত্রে সাংবাদিকদের সহযোগিতা চেয়েছেন উপদেষ্ট।
সেমিনারে স্বাগত ভাষণ প্রদান করেন বিএসআরএফ সভাপতি ফসিহ উদ্দীন মাহতাব, মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক ডক্টর একেএম আতিকুর রহমান ও অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন বিএসআরএফ সাধারণ সম্পাদক মাসউদুল হক। এছাড়াও প্যানেলিস্টদের আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন ড. মোঃ শামসুল হক, অধ্যাপক, পুরকৌশল বিভাগ, বুয়েট; ড. শর্মিন্দ নীলর্মি, অধ্যাপক, অর্থনীতি বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়; ড. খোন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম, গবেষণা পরিচালক, সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি); জনাব মেহেদী এইচ ইমন, প্রধান আন্তর্জাতিক পরিবেশ বিশেষজ্ঞ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে ব্রিজ নির্মাণ প্রকল্প; উমামা ফাতেমা, সমন্বয়ক, ৪ সদস্যবিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়; মোঃ মাহিন সরকার, সমন্বয়ক, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য প্রদান করেন মোঃ সারদার শাহদাত আলী, মহাপরিচালক, বাংলাদেশ রেলওয়ে ও মোঃ কেং চাংলিয়াং, সিইএবির প্রধান উপদেষ্টা।